ডেস্ক রিপোর্ট: ভোটাধিকার আদায়ে ৫ আগস্টের মতো রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেশের জন্য প্রয়োজনে আরেকটা লড়াই হবে। ভোটের অধিকার আদায়ে ৫ আগস্টের মতো আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছিলেন সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলে। কৃষকদের বিরুদ্ধে কোনও কারসাজি আমরা চাই না। শ্রমিকেরা যেন তাদের ন্যায্য মজুরি পান সেটা চাই। আমরা দিনের শেষে একটু শান্তিতে ঘুমাতে চাই। আপনারা কি সত্যি সত্যি পরিবর্তন চান নাকি আবারও আওয়ামী লীগের নৌকায় ফেরত যেতে চান? তাহলে ৫ আগস্ট সবাই মিলে যেভাবে রাস্তায় নেমেছিলেন আবারও সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। অধিকার আদায়ের জন্য, ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য এবং ন্যয়বিচার পাওয়ার জন্য।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম একটা স্বাধীন দেশ পাব বলে। পাকিস্তানিরা আর আমাদের ওপর অত্যচার করতে পারবে না। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম যুদ্ধ করে। রক্ত দিয়েছিলাম, লক্ষ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছিল। পরে আমরা যখন স্বাধীন হলাম যুদ্ধ করে, একটা দেশ পেলাম বাংলাদেশ। আমরা ধারণা করেছিলাম বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে এসে আমাদের সুন্দর একটি দেশ দেবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা সেটা পাইনি।
স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা কোনও রাজনৈতিক দল দেয়নি। ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সেই জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নিয়ে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। তার আগে শেখ মুজিব সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। একনায়কতন্ত্র বাকশাল গঠন করেছিলেন। তখন সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতাকে তারা নষ্ট করে দিয়েছিলেন। পরবর্তিতে আমরা যখন স্বাধীনতা পেলাম তখন এরশাদ ৮১ সালে জোর করে ক্ষমতা কেড়ে নিলেন। আমাদের ইতিহাস, অতীত জানা দরকার, রাতারাতি কিছু হয়ে যায়নি।
তিনি বলেন, দীর্ঘীদন ধরে আমরা লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি। এ দেশ শান্তির, ভালোবাসার, উন্নয়নের দেশ। এই আওয়ামী লীগ যখন ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এলো মানুষের ওপর শুরু হলো অত্যাচার-নির্যতন। এবার তারা একদলীয় শাসন চালু করতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করল। তারা ক্ষমতায় থাকবে আর নির্বাচন হবে। ফলে আওয়ামী লীগ একাই ভোট দিয়েছে, অন্য কাউকে ভোট দিতে দেয়নি। ফলে আমরা তিন তিনবার ভোট দিতে পারি নাই। আওয়ামী লীগের সময়ে সাংবাদিকরা তাদের বিরুদ্ধে কিছু প্রকাশ করতে পারেননি। আমরা যেটা বলেছিলাম সেটাও প্রকাশ করতে দেয়নি। সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করেছিল।
অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আজকে সুযোগ এসেছে। আমরা আগের অবস্থাকে পরিবর্তন করব। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৬ বছর জেলে ছিলেন। তাকে যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানে মানুষ থাকার মতো পরিবেশ ছিল না। তাকে ধীরে ধীরে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। যাক এখন অন্তত তিনি চিকিৎসার একটু সুযোগ পাবেন। আর আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আসামি করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।