পরীক্ষার হলে অবশ্যই ৯০০ নম্বরের উত্তর লেখার চেষ্টা করবেন। লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের নম্বর ক্যাডার পাওয়ার ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দেয়। উত্তর কমন না পড়লেও নিজে থেকে গুছিয়ে লেখার সামর্থ্য এবং সারা জীবনের পড়া থেকে লিংক আপ করে লেখার সামর্থ্য আপনাকে লিখিত পরীক্ষায় এগিয়ে রাখবে। বর্তমানে প্রচণ্ড গরমে লোডশেডিং হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে হবে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হতে পারে। এগুলোর জন্য অবশ্যই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে হবে। যেসব বিষয় আমাদের হাতে নেই, সেগুলো নিয়ে চিন্তিত হওয়ারও কিছু নেই। কোনো একটি পরীক্ষা আপনার আশানুরূপ না হলে সেটার প্রভাব যেন অন্য পরীক্ষায় না পড়ে, সে বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন। পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ তুলে ধরা হলো।
ইংরেজি
ইংরেজি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ ১০০ নম্বরের উত্তর করতে হয় একটা প্যাসেজ থেকেই। বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নগুলোর উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারলে এখানে ২২-২৩ নম্বর পাওয়া সম্ভব। প্রতিটি প্রশ্নে ৩ নম্বর থাকে বলে উত্তরগুলো একটু বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করবেন। তবে অযথা বাক্য বড় করবেন না। সারর্মম অবশ্যই ৯০-১০০ শব্দের মধ্যে লিখবেন। লেটার টু দ্য এডিটর এবং ফিচার দুইটা দুই জিনিস। এটা মাথায় রাখবেন। অনুবাদগুলো অবশ্যই ভাবানুবাদ করে করবেন। আক্ষরিক করতে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। পরীক্ষায় পার্থক্য গড়ে দেয় অনুবাদ। এখানে একটু বেশি সময় দেবেন। এক হাজার শব্দের মধ্যে রচনা লিখতে হবে। বেশির ভাগ প্রার্থীর রচনা কমন পড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে রচনা ১০০০-১১০০ শব্দের মধ্যে লেখার চেষ্টা করবেন। কত পৃষ্ঠা হলো সেটা মুখ্য বিষয় নয়। ইংরেজিতে যাদের শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ, তারা একটু বেশি সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবেন। ইংরেজি বাক্য অযথা বড় করার দরকার নেই।
বাংলাদেশ বিষয়াবলি
বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব প্রশ্নের উত্তর শেষ করা। শেষ সময়ে মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান এবং অর্থনৈতিক সমীক্ষায় গুরুত্ব দিন। অবশ্যই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসবেন।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় না জানলে অযথা বানিয়ে লিখবেন না। বিগত কয়েকটি বছরের বিসিএসের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলো থেকেই প্রশ্ন হয়। বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব অবশ্যই পড়ে যাবেন। প্রবলেম সলভিং এবং পলিসি পেপার দুইটা ভিন্ন জিনিস। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই পলিসি পেপারের ছক দেখে যাবেন। এ বিষয়ে আপনি যেভাবেই লিখুন না কেন, কিছু না কিছু নম্বর পাবেন। তবে বেশি নম্বর পেতে হলে অবশ্যই ছক মেনে লিখতে হবে।
বাংলা
ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশে বেশি নম্বর তোলা সম্ভব। সিলেবাসে সারমর্ম উল্লেখ আছে; সারাংশ নেই। ভাব সম্প্রসারণ এবং অনুবাদ যেন খুব ভালো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। বাংলা রচনা সময় নিয়ে লিখবেন। বাংলা খাতা পরিপাটি ও বানান যেন ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিজ্ঞান
বিজ্ঞানে বানিয়ে লেখার সুযোগ নেই। প্রশ্নে যতটুকু চাইবে, উত্তরে ঠিক ততটুকুই লিখবেন। অযথা উত্তর বড় করবেন না। যেসব প্রশ্নের উত্তরে চিত্র আঁকা সম্ভব, তা অবশ্যই দেবেন। যাঁরা বিজ্ঞানের ছাত্র নন, তাঁদের ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিকস পার্ট নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, বিগত সালের প্রশ্ন থেকেই তিন-চারটি প্রশ্ন কমন পড়ে। বিজ্ঞানে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর করতে হয়, তাই সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা
গণিত নিয়ে অনেকে শঙ্কায় থাকেন। গণিতে দুর্বল হলেও ২৫-৩০ নম্বর পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মানসিক দক্ষতায় জোর দিতে হবে। আগের বছরের বিসিএসের প্রশ্ন থেকে মানসিক দক্ষতায় অনেক কিছুই কমন পড়ে।