লিখিত পরীক্ষার ফলের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে ৪১তম বিসিএসের প্রার্থীদের? প্রায় ১০ মাস আগে শেষ হয়েছিল এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। ফলের আশায় থাকা প্রার্থীদের আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে?
পিএসসি–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পরীক্ষকদের ভুলের কারণে এই বিসিএসের ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। ফল প্রকাশ করার ঠিক আগমুহূর্তে এমন কিছু গুরুতর ভুল পাওয়া গেছে, যা শোধরাতে সময় লাগছে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি)।
এই ফল ঠিক কত দিন পর প্রকাশিত হতে পারে, তা–ও সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি পিএসসি–সংশ্লিষ্ট ওই সূত্র।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা–সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক ত্রুটি পাওয়া গেছে ৪১তম বিসিএসের পরীক্ষার খাতায়। এগুলো সংশোধন করতে সময় লাগছে। তবে কত দিন সময় লাগবে, সেটি নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এটি প্রকাশ করতে কি মাস পেরিয়ে যাবে? এ প্রশ্নেও উত্তর মেলেনি।
পিএসসি সূত্র জানায়, ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখতে গিয়ে ৩১৮ পরীক্ষক দায়িত্ব অবহেলা করেছেন। তাঁদের ভুলের কারণে পিএসসি এই বিসিএসের ফল প্রকাশ করতে পারেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিএসসির এক কর্মকর্তা বলেন, ৮৮ হাজার খাতা। সেখান থেকে ভুল খাতাগুলো বের করা সহজ ব্যাপার নয়। আবার পরীক্ষক সশরীর এসে সংশোধন না করলে ফলও প্রকাশ করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, পিএসসির খাতা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। খাতা যেকোনো সময় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। সে জন্য সেখানে ভুল রাখা সম্ভব নয়।
এতে পিএসসির সম্মান ক্ষুণ্ন হবে। তাই এগুলো নির্ভুল করতেই সব পরীক্ষককে ডাকা হচ্ছে। যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে। একই সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরাও যাতে সঠিক মূল্যায়ন ও ন্যায়বিচার পান, সে জন্য পিএসসি কাজ করছে।
১০ মাস আগে শেষ হয়েছে ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। তবে এখনো ফল পাননি চাকরিপ্রার্থীরা। পিএসসি বলছে, তিন শতাধিক পরীক্ষকের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে।
পিএসসির একাধিক সূত্র জানায়, ফল প্রকাশে দেরির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৩১৮ পরীক্ষকের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গুরুতর অবহেলাকারী পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। এত দিনেও ফল প্রকাশিত না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী চাকরিপ্রার্থীরা।
পিএসসি সূত্র জানায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৪১তম বিসিএসের ফল প্রকাশের লক্ষ্যে পিএসসির বিশেষ সভায় আলোচনা হয়েছে। এমন তিনটি সভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ ফল প্রকাশে দেরি হবে বলে জানায়। পরে দেরির কারণ অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করে পিএসসি। কমিটি তদন্ত শেষে ফল দেরির বেশ কিছু কারণ তুলে ধরে।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেউ কেউ পরীক্ষার্থীর কোনো কোনো প্রশ্নের উত্তরের জন্য নম্বরই দেননি। অনেকে খাতার শেষে থাকা প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন। কোনো কোনো খাতায় পরীক্ষক নম্বরের যোগফলে ভুল করেছেন। অনেকে আবার এমনভাবে নম্বর দিয়েছেন, যা পুনর্মূল্যায়নের জন্য তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠাতে হয়েছে।