বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ জয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২৫ বছর আগে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে এমন চমক দেখিয়েছিল বাংলাদেশও। কিন্তু এর পর বাংলাদেশের অর্জনটা খুব ভালো হয়নি।
টাইগারদের সাবেক আর যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান কোচ স্টুয়ার্ট ল বলছেন, এ ২৫ বছরে বাংলাদেশ এগোয়নি। টাইগার ক্রিকেট পিছিয়ে থাকার পেছনে দায়টা দেখছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
স্টুয়ার্ট ল, যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট দলের কোচ। তার অধীনে র্যাংকিংয়ে ৯-এ থাকা বাংলাদেশকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়েছে ১৯তম যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে মার্কিন দলের কোচ হলেও টাইগার ক্রিকেটে বেশ পরিচিত একটি নাম স্টুয়ার্ট ল। বছরের শুরুতেও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যুবাদের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন এ অজি। এর পর বিসিবি চুক্তি নবায়ন না করায় তিনি পাড়ি দেন যুক্তরাষ্ট্রে। এর আগে ২০১১-১২ সালে স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলেরও হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন স্টুয়ার্ট ল। তার অধীনে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছিলেন সাকিব-মুশফিকরা।
বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে তাই ভালো জানাশোনা লর। সম্প্রতি আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ দল সম্পর্কে এ অজি বলেন, ‘২৫ বছরে বাংলাদেশ এগোয়নি। তারা যা কিছুই করছে, তা কাজে আসছে না। তাদের খুঁজে বের করতে হবে— কী করলে নিজেদের ছাপ রাখা যায়।’
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মতো পরাশক্তিকে হারিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে নিজেদের আগামনী বার্তা জানান দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর গত দুই যুগে বড় দলগুলোর বিপক্ষে কয়েকটি সিরিজ জিতলেও আইসিসি বা এসিসির কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলতে পারেননি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টাইগার ক্রিকেট পিছিয়ে থাকার জন্য তিনি দায় দেখছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
স্টুয়ার্ট ল বলেন, ‘হয়তো এখন বসে ভাবার সময় যে, আমরা যেভাবে করছি, তা কাজে লাগছে না। আমরা এগোইনি, হয়তো ভিন্ন কিছু করা দরকার। এসব আলোচনা বর্তমান বোর্ড করে না, কিন্তু তাদের খেলাটির সবদিকেই চোখ রাখতে হবে।’
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা চাইলেও শক্তিশালী অ্যাথলেট হতে পারবে না। ফলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যারিবীয় কিংবা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মতো বাহুর জোর খাটাতে পারবে না টাইগাররা। তবে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলও বাজিমাত করবে বলে মনে করেন ল।
তিনি বলেন, ‘তারা (তরুণ ক্রিকেটার) শক্তিশালী অ্যাথলেট নয়, কিন্তু তাদের শরীর কোমল প্রকৃতির। তাই তারা দ্রুতগতিতে বল করতে পারে এবং স্পিন করতে পারে। আমরা সবাই তা জানি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বা অস্ট্রেলিয়ানদের মতো কখনো শক্তিশালী অ্যাথলেট হতে পারবে না তারা, যাদের বেড়ে ওঠা ও ডায়েট আলাদা ধরনের।’
তিনি আরও বলেন, ‘তরুণদের ১২-১৬ বছর বয়সে তুলে আনা, তাদের ভালো ডায়েট ও ফিজিক্যাল ফিটনেসের ভালো ভিত গড়ে দেওয়া–বেড়ে ওঠার এই ধাপটা যদি বাংলাদেশ পার করতে পারে, তাহলে বিশ্ব এমন এক বাংলাদেশকে দেখতে পাবে, যারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে এবং তারা ক্রিকেট পাগল দেশ। সামাজিক পটভূমি ও বেড়ে ওঠা সম্পর্কে ভুলে গিয়ে কেবল তাদের খুঁজে বের করতে হবে। যদি তাদের প্রতিভা থাকে, তাহলে সেই প্রতিভাকে কাজে লাগানো শুরু করুন।’