The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫

১৫ হাজার সেনা নিয়োগ দিয়েছে হামাস

ডেস্ক রিপোর্ট: ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী ও প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যেই ১০ থেকে ১৫ হাজার নতুন সেনা নিয়োগ দিয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের দুটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ দুই কর্মকর্তা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মূল্যায়নের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সেনা নিয়োগের এই সংখ্যা হামাসের প্রতিরোধক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে। মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরও হামাস তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হামাসের সদস্য নিয়োগ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে যে, হামাস তাদের সদস্যসংখ্যা পুনরুদ্ধারে সক্ষম এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবেই রয়ে গেছে।

বাইডেন প্রশাসনের শেষ সপ্তাহগুলোতে বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, হামাস উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হলেও নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের বড় অংশই তরুণ এবং তাদের সঠিক সামরিক প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। ফলে তাঁদের বেশির ভাগকেই প্রাথমিক নিরাপত্তা কার্যক্রমে নিযুক্ত করা হয়েছে।

তবে এই নিয়োগ প্রমাণ করে যে, দীর্ঘ যুদ্ধ এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও হামাস অভিযোজনে সক্ষম এবং নতুন প্রজন্মের প্রতিরোধযোদ্ধা তৈরি করে তাদের সংগঠন টিকিয়ে রেখেছে। এটি কেবল তাদের সংগঠনের স্থিতিশীলতাই নয়, ভবিষ্যতের প্রতিরোধ কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সক্ষমতাকেও নির্দেশ করে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ১৫ মাসব্যাপী সংঘাত গাজায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। তবে গত সপ্তাহের রোববার থেকে শুরু হওয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় সংঘাত আপাতত বন্ধ। এর পরও হামাসের প্রতিরোধশক্তি এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির পর পুনর্গঠনের ক্ষমতা স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে, তারা এখনো প্রতিরোধ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে টিকে আছে। এটি তাদের স্থিতিশীলতা, সংগঠনের কৌশলগত মানসিকতা এবং ভবিষ্যতের প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুতির সক্ষমতার সাক্ষ্য দেয়।

অপরদিকে, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও চার নারী ইসরায়েলি সেনাকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। গাজায় ১৫ মাস বন্দী থাকার পর ওই চার ইসরায়েলি নারী সেনা মুক্তি পেয়েছেন। তাঁর হলেন—কারিনা আরিয়েভ, দানিয়েলা গিলবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। তাঁদের ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাঁরা ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হ্যাগারি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার বন্দিবিনিময় হলো। প্রথম ধাপে গত সপ্তাহে তিন ইসরায়েলি বন্দী মুক্তি পায়, বিনিময়ে ৯০ জন নারী ও শিশু ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এই চার সেনা গাজার কাছে নাহাল ওজ ঘাঁটি থেকে বন্দী হন। হামাসের হামলায় ওই ঘাঁটিতে ৬০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে গাজায় সংঘাত বন্ধের চেষ্টা চলছে। তবে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.