The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫

১৫ জানুয়ারির মধ্যে অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চায় বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্ররা

ডেস্ক রিপোর্ট: আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ শীর্ষক সমাবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তারা এ দাবি করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, সচিবালয়ে, পুলিশে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলে। যারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তাদের বলছি, আপনারা রিয়েলিটি মাইনে নেন। আপনাদের আম্মু আর ফিরবে না। তাকে আমরা সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি।

সরকারকে উদ্দেশ করে এ ছাত্রনেতা বলেন, আপনারা বারবার বলতে থাকেন, সিন্ডিকেট এক হাত থেকে আরেক হাতে গিয়েছি। তাহলে আপনাদের কাজটি কী? দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। অতিশিগগরই পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা শাপলা চত্ত্বরের কথা ভুলিনি। বাতি নিভিয়ে রাতে আলেম-ওলামাদের মারা হয়েছে। গত ১৬ বছরে হওয়া সকল গুম, খুনের বিচার করতে হবে।

১৫ জানুয়ারির মধ্যে অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারির দাবি জানিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, পাড়া-মহল্লায় যাবেন, ঘোষণাপত্রের বিষয়ে তারা কী বলতে চায় শুনবেন। ফ্যাসিবাদ, মুজিববাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ৭১, ৯০, ২৪ এ যারা শহীদ, আহত হয়েছে তাদের ত্যাগের কথা ঘোষণাপত্রে লিখিত থাকতে হবে। যদি তা না থাকে মেনে নেয়া হবে না। ৫৩ বছরে ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা থাকতে হবে। আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেই বাংলাদেশে অন্য কোনো রাষ্ট্রের চোখ রাঙানি চলবে না। যে বাংলাদেশে চাদাবাজি, টেন্ডার দেখতে চাই না।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অতি দ্রুত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপে সক্রিয় হোন। না হলে আইন নিজের হাতে তুলে নেবে ছাত্র-জনতা। খুনি হাসিনার বিচার করতে হবে। চব্বিশের বাঘের বাচ্চারা যতদিন থাকবে, ততদিন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে দেবে না। তারা সংস্কার করেই ছাড়বে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সচিব আখতার হোসেন তার বক্তব্য বলেছেন, দেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়। জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চায়। নতুন সংবিধান চায়। সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেয়ার কথা বলেছে, তখন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে এ ঘোষণাপত্র দেয়ার। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে এ ঘোষণাপত্র দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধানের প্রত্যাশা করে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বলা হয়, সংবিধানের ম্যান্ডেন্ট কীভাবে হবে? আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। যারা নির্বাচিত হবে, তারাই নতুন সংবিধান দেবে দেশকে। তারাই বৈধতা দেবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, স্বাধীনতা বলতে এতদিন বোঝানো হয়েছে শুধু একটি পরিবার, একটি দল। ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের স্পৃহা হচ্ছে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার অধিকার। আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র সেই ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে নেয়ার।

শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বিচারের আগে কোনও নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। তিনি বলেন, ৫ মাসেও কি অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেয়ার সময় পায় নাই সরকার? এটা আমাদের ঐতিহাসিক দায়। এ প্রক্লেমেশন নিয়ে কোনও কালক্ষেপণ চাই না। আলোচনার টেবিল থেকে কোনও সমাধান আসছে না। রাজপথই একমাত্র উপায়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই মার্চ ফর ইউনিটিতে সারাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন। ভোর হতেই শহীদ মিনারে আসতে থাকেন তারা। ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে জড়ো হন ঢাকা ও বাইরে থেকে আসা ছাত্র-জনতা। দুপুরের পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে ততই বাড়তে থাকে মানুষ। একপর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।

এ সময় ছাত্র-জনতাকে ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন নিপাত যাক’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি-আজাদি’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’— প্রভৃতি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.