The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

১৪ ফেব্রুয়ারি অশ্লীলতা রোধে রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটির নতুন উদ্যোগ

ডেস্ক রিপোর্ট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে অশ্লীলতা রোধে রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১২টা থেকে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়, যেখানে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটির সদস্যরা প্রশাসন ভবন থেকে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও সংস্কৃতি রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।

প্রচারণা চলাকালীন দ্বীনি সোসাইটির সদস্য তানিম বলেন, “ভালোবাসা পবিত্র, তবে এর অপব্যবহার এখন একটি সাধারণ প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে তালাকের হার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো প্রেমের বিয়ে, যা ১৪ ফেব্রুয়ারির মতো দিনগুলোর প্রভাবেই বাড়ছে। এছাড়া, গর্ভপাতের হার বৃদ্ধিতেও এই দিবসের ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে ভালোবাসার নামে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ঘটছে, যা আমাদের সংস্কৃতি ও ধর্মের পরিপন্থী। আমরা পাশ্চাত্য সংস্কৃতি অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেদের মূল্যবোধ হারাচ্ছি। বছরের প্রতিটি দিনই ভালোবাসার জন্য, তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে দেশে যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। মিডিয়া ভালোবাসা দিবসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দঘন দিন হিসেবে প্রচার করলেও বাস্তব জীবনে অনেক মিডিয়া ব্যক্তিত্বই পারিবারিক অশান্তি ও বিচ্ছেদের শিকার হচ্ছেন।”

রাজশাহী কলেজ অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দুর্জয় বলেন, “ভালোবাসা খারাপ কিছু নয়, ভালোবাসা দিবস উদযাপনও দোষের কিছু নয়। তবে এর অপপ্রয়োগ করা উচিত নয়। কিছু মানুষ এই দিনে নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ ভুলে অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, যা আমাদের সমাজ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। দ্বীনি সোসাইটির এই উদ্যোগ যদি অশ্লীলতা রোধে কার্যকর হয়, তবে তা আমাদের সবার জন্যই কল্যাণকর হবে।”

রাজশাহী কলেজ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুকাইয়া সুলতানা বলেন, “ভালোবাসা হালাল, তবে অবিবাহিত ছেলে-মেয়েদের মধ্যে যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তা সম্পূর্ণ হারাম। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পার্ক ও রেস্টুরেন্টের চিত্র দেখলেই বোঝা যায়, সমাজ কোন পথে এগোচ্ছে। এই ধরনের সম্পর্ক ও ভালোবাসা দিবস উদযাপন ইহকাল ও পরকালের জন্য ক্ষতিকর। তাই এ বিষয়ে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। দ্বীনি সোসাইটির প্রচেষ্টায় আমি নিজেও কাজ করতে চাই, কারণ আমরা শিক্ষার্থীরা দেশের ভবিষ্যৎ, অথচ অনেক শিক্ষার্থী প্রেমের সম্পর্কের কারণে বিপথে চলে যাচ্ছে।”

রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, “ভালোবাসার নামে অশ্লীলতা রোধে এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। যদি আগে থেকেই এ ধরনের কার্যক্রম চালু করা হতো, তাহলে অনেকেই আগেভাগেই সতর্ক হতে পারত। শুধু রাজশাহী কলেজ নয়, এই ধরনের কার্যক্রম পুরো দেশজুড়ে পরিচালনা করা দরকার। দ্বীনি সোসাইটির সদস্যরা যদি অন্তত একজন শিক্ষার্থীকে ১৪ ফেব্রুয়ারির অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখতে পারে, তবে সেটাই তাদের সফলতা হবে।”

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, “দ্বীনি সোসাইটির সদস্যরা একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে কলেজের মধ্যে যেন কোনো অপ্রীতিকর বা আক্রমণাত্মক ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। অশ্লীলতা রোধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার এই প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। শুধু ১৪ ফেব্রুয়ারি নয়, ভবিষ্যতেও তাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত।”

এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজশাহী কলেজ দ্বীনি সোসাইটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে, যা ভবিষ্যতে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.