ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের গুচ্ছ ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকলীন সময় কেন্দ্র এলাকায় অনুমোদনহীন গতিশীল ও বিকট শব্দের বাইকের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত ছিলেন পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও অবিভাবকেরা। এদিন সাইলেন্সর খুলে হলার লাগিয়ে উচ্চ শব্দে পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে এসব বাইকগুলো চলতে দেখা যায়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ব্যবস্থা নিলে কিছুটা শিথিল হয় এদের নিপীরন।
শুক্রবার (৩ মে) দুপুর ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ইউনিটভূক্ত মানবিক বিভাগের পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এতে ৭ হাজার ২৪৬ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলা’ বাইক সার্ভিসের ৬টি বাইককে জরুরী পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌছে দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইকগুলোসহ পরীক্ষার্থীদের সাথে আসা বাইকগুলোর জন্য ডরমেটরি গেটে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে বাইকগুলো যাতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে না আসতে পারে সেজন্য দায়িত্বরত আনসার সদস্যদেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রশাসন থেকে ৬টি বাইকের অনুমতি প্রদান করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এর সংখ্যা ছিলো আরও অধিক। বেপোরোয়া গতিতে চলতে দেখা যায় জয় বাংলা বাইক সার্ভিসের বাইরের বাইকদের। হলার লাগানো বাইকের বিকট শব্দে পরীক্ষা কেন্দ্রে অননুমোদিত বাইক চালকদের বেপরোয়া গতি নিয়েও ভীতি প্রকাশ করেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অনুমতিহীন বাইকগুলোর চালক বেশীরভাগই শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন এসব কর্মকান্ডে উপস্থিত এক অভিভাবক বলেন, এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষায় এরকম শব্দদূষণ কোনভাবে কাম্য নয়। শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য যদিও বাইক সার্ভিসটি প্রশংসার দাবীদার তবুও পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে এরকম উচ্চ শব্দদূষণ শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। পরবর্তীতে এরকম ঘটনা না ঘটুক সেই প্রত্যাশা রাখি।
অনুষদ ভবনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী তাসলিমা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি দ্বিতীয় তলায় রুমে বসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। এসময় বাইরে থেকে বারবার বাইকগুলোর তীব্র শব্দে বারবার মনোযোগ নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি আমার জন্য একটি বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা ছিলো।
এসময় হলার যুক্ত ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের আরওয়ানফাইভ বাইক নিয়ে ঘুরাফেরা করা ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আসিফ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর সামনে আমাদের হলগুলোর হেল্প ডেস্ক ছিলো। সে সময় আমি বন্ধুর বাইক নিয়ে ডেস্কগুলো দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম না যে বাইকে হলার লাগানো। পরে আমি বিষয়টি বুজতে পেরে বাইকটি রেখে দিয়েছিলাম। তবে আমি ভুলটি স্বীকার করছি জয় বাংলা বাইকের বাইরে বাইক চালানো আমাদের উচিত হয়নি।
এসময় শৃঙ্খলা কমিটির দায়িত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, আমার সামনেই যে কয়েকটি বাইক চলাচল করছিলো তাদেরকে আমি সাথে সাথেই নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু এর পরেও কয়েকটি বাইক অবাধে চলাফেরা করেছিলো। আমি এ বিষয়ে স্যারের সাথে কথা বলবো যাতে পরবর্তী পরীক্ষায় এরকম কোনো ঘটনা না ঘটে।