The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪

স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান

খুবি প্রতিনিধি: যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম। আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এআইটি) ইমেরিটাস প্রফেসর ড. এটিএম নূরুল আমিন এবং কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আব্দুল হাই শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী।

সভায় বক্তারা বলেন, বুদ্ধিজীবীরা জাতির মনন জগতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তারাই জাতির মেধাবী সন্তান। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাত্র দু’দিন আগে জাতিকে মেধাশূন্য করতে বরেণ্য শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ মেধাবী পেশাজীবীদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পরেও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। কিন্তু এসব ঘটনার কোনো তদন্ত হয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। যার কারণে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের এ বিষয়টি ৫৪ বছর পরেও অমীমাংসীত। বক্তারা আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে পতিত সরকারের শাসনামলে ইতিহাসকে অনেক ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তৎকালীন সরকার ইসলাম বিদ্বেষী হওয়ায় জাতিকে ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে বিভক্ত করে রেখেছে। জাতিকে বিভক্ত করার এই ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বক্তারা বলেন, জালিম ও জুলুমের বিরুদ্ধে বাক স্বাধীনতা অর্জনই হচ্ছে সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা ভূ-খণ্ডের স্বাধীনতা পেলেও ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমরা নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতা পেয়েছি। যার কারণে সবাই মুক্তমনে কথা বলতে পারছি। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্তবুদ্ধি চর্চার জায়গা। এখানে সব ধরনের মতের চর্চা হবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এই স্বাধীনতা আমাদের ধরে রাখতে হবে।

সভার শুরুতে বক্তারা শহিদ বুদ্ধিজীবী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, আবু সাঈদসহ সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এ সময় বক্তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ মীর মুগ্ধ’র নানা স্মৃতিচারণ করেন।

দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও আইন স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ নাসিফ আহসান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তৃতা করেন উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক মোঃ মাহদী-আল-মুহতাসিম নিবিড় ও আইরিন আজহার ঊর্মি। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, প্রভোস্ট, পরিচালকসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দিবসের শুরুতে সকাল ১০.৩০ মিনিটে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সম্মুখে কালোব্যাজ ধারণ এবং উপাচার্যের পক্ষে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান কর্তৃক জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান কর্তৃক কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের প্রাক্কালে শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে একটি র‌্যালি শুরু হয়ে শহিদ মিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শহিদ মিনারে উপাচার্যের পক্ষে উপ-উপাচার্য শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্কুলের ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টবৃন্দসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপরই খুলনা বিশ্ববিদ্যলয় স্কুল, বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, বিভিন্ন আবাসিক হল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এ ছাড়া বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.