ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছিল। এক পর্যায়ে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম উঠে যায় ১৩৯ ডলারে। আজ শনিবার আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ৯০ ডলারেরও নিচে নেমে এসেছে।
অয়েল প্রাইস ডটকম বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দুই ধরনের অপরিশোধিত তেলই এখন ১০০ ডলারের কমে বিক্রি হচ্ছে। এই রিপোর্ট লেখার সময় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ৮৮ ডলার ৪৩ সেন্টে বিক্রি হয়েছে। অপরদিকে ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেল বিক্রি হয়েছে ৯৩ ডলার ৯৫ সেন্টে।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এরপর এত নিম্নমুখী হলো তেলের দাম। এ মুহূর্তে মন্থর বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা। ইতোমধ্যে শিল্প কার্যক্রম কমে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা কমেছে। ফলে তেলের মূল্য কমেছে।
মাত্র ২ মাস আগেও ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম ছিল ১২০ ডলারের ওপরে। তবে ধীরে ধীরে জ্বালানি পণ্যটির মূল্য কমছে। সাম্প্রতিক সময়ে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে উৎপাদন বেড়েছে। বিশ্বজুড়ে তেলের চাহিদাও কমেছে। এছাড়া সময় যত গড়াচ্ছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা তত বাড়ছে। এতে তেলের দর কমছে।
লিবিয়া থেকে তেলের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চীনে অর্থনৈতিক কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে, ফলে বিশ্বের সবথেকে বড় তেল আমদানিকারক দেশটির আমদানিও হ্রাস পেয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে তেলের দাম বেশি থাকায় বিপাকে পড়েছিল আমদানিকারক দেশগুলো। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অর্থনীতিতেও ব্যাপক চাপ পড়ে। উন্নয়নশীল এবং দরিদ্র দেশগুলোর ফরেন কারেন্সির রিজার্ভ ফাঁকা হয়ে আসে তেল আমদানি করতে গিয়ে। এর প্রভাব পড়ে অন্য পণ্যের মূল্যেও। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির পারদ ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠে যায়। জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। যা ১৯৮১ সালের পর সর্বোচ্চ।
এডওয়ার্ড জোন্সের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ফয়সাল এ হারসি বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দরপতনের অন্যতম কারণ এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার দিকে। তারা দেখছেন উদ্ভূত কঠিন পরিস্থিতি কিভাবে গোটা বিশ্বের জ্বালানির চাহিদাকে প্রভাবিত করে।