নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) হত্যা মামলায় তার সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনির (৩০) বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহিমের আদালত তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় মামলার একমাত্র আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মামুনুর রশীদ লাভলু জানান,স্কুলছাত্রী অদিতা হত্যা মামলার একমাত্র অভিযুক্ত সাবেক গৃহশিক্ষক রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। ২ জুলাই মামলার প্রধান সাক্ষী ও বাদী নিহত অদিতার মায়ের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য করা হয়। আসামিপক্ষ মামলাটির অব্যাহতি চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে।
এর আগে, হত্যাকাণ্ডের প্রায় সাত মাসের মাথায় গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টায় কোর্ট পুলিশের কাছে অভিযোগপত্র হস্তান্তর করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌধুরী প্রমোজ।
উল্লেখ্য,উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী পৌর এলাকার লক্ষ্মীনারায়ণপুরে নিজ বাসায় খুন হন নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা। ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ গিয়ে দেখে, মরদেহ অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ তাৎক্ষণিক অদিতার প্রাইভেট শিক্ষক আব্দুর রহিম রনিসহ তিন জনকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহত অদিতার মা রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর হত্যার দায় স্বীকার করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ আলীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় রনি।
জবানবন্দিতে রনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার সময় রনি অদিতার বাসায় যায়। এরপর গল্পের এক পর্যায়ে অদিতাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করে। তখন আদিতা রনির ঘাড় ও গলায় আঁচড় দেয়। এরপর রনি ওড়না দিয়ে অদিতার হাত বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় অদিতা ঘটনা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে রনি তাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে। ঘটনার মোড় ঘোরাতে রনি ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে অদিতার হাত ও গলা কেটে দেয়। একই সঙ্গে ঘরে আলমিরাতে থাকা মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখে।