যবিপ্রবি প্রতিনিধি: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অংশ হিসেবে ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গ্রিন এনার্জিতে প্রবেশ করছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। এ লক্ষ্যে যবিপ্রবি ও সুপার স্টার রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড-এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘অপারেশনাল এক্সপেনডিচার (অপেক্স)’ মডেলে ‘বিল্ড ওন অপারেট (বিওও)’ পদ্ধতিতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো আনিছুর রহমান ও সুপারস্টার রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান।
স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর মাধ্যমে দৈনিক প্রায় ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে কোম্পানিটি। এ চুক্তির ফলে প্রচলিত দামের চেয়ে প্রায় ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ সাশ্রয়ে বিদ্যুৎ ক্রয় করতে পারবে যবিপ্রবি। এর মাধ্যমে সবুজ অর্থনীতি তথা পরিবেশের বিপর্যয় রক্ষার অংশ হিসেবে গ্রিন এনার্জির আওতাভুক্ত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তির বিষয়টি মধ্যস্ততা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১ মেগাওয়াট এবং সক্ষমতা ৩৬৫০ কেভিএ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভবন চালু হওয়ার পরে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২ হাজার কিলোওয়াট বা ২ মেগাওয়াট। সোলার প্যানেল স্থাপনের পরে প্রায় ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ পরিমাণ অর্থ আমাদের সাশ্রয় হবে। প্রায় ১ দশমিক ৫ লক্ষ বর্গফুট পরিমাণ জায়গায় বসানো হবে এ রুফটপ সোলার সিস্টেম। এতে প্রতি বর্গফুট জায়গার জন্য মাসে ২ টাকা হারে ভাড়াও পাবে বিশ্ববিদ্যালয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সুপারস্টার রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন অনুসারে এই রিনিউয়েবল এনার্জি পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর পর উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডেও সরবরাহ হবে।
যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন চুক্তি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরেই যবিপ্রবিকে গ্রিন এনার্জির আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করি। দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টায় দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যবিপ্রবিই সর্বপ্রথম এ ধরনের চুক্তি করলো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুতের যেমন চাহিদা পূরণ হবে, অপরদিকে পরিবেশ রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একইসঙ্গে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ার ফলে ঘাটতি পূরণে সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশ সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবুজ অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে তারই প্রমাণস্বরূপ যবিপ্রবির গ্রিন এনার্জির অন্তর্ভুক্ত হওয়া বলে তিনি মন্তব্য করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যবিপ্রবির ডিন অধ্যাপক ড. এইচ. এম. জাকির হোসেন, অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, ড. মোঃ হাফিজ উদ্দিন, ড. মোঃ আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ইমরান খান, মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মেহেদী হাসান, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, প্রধান প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো আনিছুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) নাজমুস সাকিব, নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) তৌহিদ ইমাম, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।