The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি হাতাহাতির পর ভোট গণনায় সভাপতি–সম্পাদক দুটোই আ. লীগপন্থী

এক মাসের বেশি আটকে থাকা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে সম্পাদক পদে পুনরায় ভোট গণনা নিয়ে সমিতি ভবনের সম্মেলন কক্ষের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়। তাতে সভাপতির সঙ্গে সম্পাদক পদেও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

আইনজীবী মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্বাধীন নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত নতুন উপকমিটি বিকেল চারটা থেকে ভোট গণনা শুরু করে। রাত ১০টার দিকে ফল ঘোষণা করা হয়।

ফলাফলে সভাপতি ও সম্পাদকসহ সাতটি পদে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা। আর দুটি সহসম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ অপর সাতটি পদে জয়ী হয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থীরা।

ফলাফল অনুসারে, সভাপতি পদে সাদা প্যানেলের মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ৩ হাজার ২৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের মো. বদরুদ্দোজা পেয়েছেন ২ হাজার ৪৭৯ ভোট। আর সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলের আবদুন নূর ২ হাজার ৮৯১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের মো. রুহুল কুদ্দুস পেয়েছেন ২ হাজার ৮৪৬ ভোট।

সাদা প্যানেল থেকে সহসভাপতি দুটি পদে মো. শহীদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হোসেন এবং সদস্যপদে ফাতেমা বেগম, শাহাদাত হোসেন ও সুব্রত কুমার কুন্ডু জয়ী হয়েছেন। নীল প্যানেল থেকে সহসম্পাদকের দুটি পদে মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. কামাল হোসেন এবং চারটি সদস্যপদে মাহদীন চৌধুরী, গোলাম আক্তার জাকির, মঞ্জুরুল

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সমিতির নির্বাচনে (২০২২-২৩) ভোট গ্রহণ হয়। ১৭ মার্চ ভোট গণনায় সভাপতি পদে সাদা প্যানেলের মোমতাজ উদ্দিন ফকির এগিয়ে থাকলেও সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের রুহুল কুদ্দুস এগিয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে আবেদন করেন। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে হইচই-হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামান সমিতির কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র দেন। এতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা আটকে যায়।

যেভাবে ফল ঘোষণা
গতকাল মঙ্গলবার আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ১২ এপ্রিল সমিতির কার্যকরী কমিটির মেয়াদের শেষ এক সভায় তাঁকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি নির্বাচন উপকমিটি করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় ২৭ এপ্রিল বেলা ৩টায় নির্বাচন–পরবর্তী বাকি কাজ শেষ করা হবে।

তবে আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সম্পাদক (নীল প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী) হিসেবে মো. রুহুল কুদ্দুস দাবি করেন, ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কাজেই ওই সভায় গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্ত অবৈধ।

প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আগের ঘোষণা অনুসারে আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা–সংক্রান্ত নতুন উপকমিটি সমিতির তিনতলায় অবস্থিত সম্মেলনকক্ষে ঢুকতে গেলে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। আগে থেকে সমিতির সম্মেলনকক্ষের অন্য পাশে অবস্থান নিয়ে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এই উপকমিটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে, অজি উল্লাহর নেতৃত্বে আইনজীবীরা ভোট গণনার জন্য সম্মেলনকক্ষে ঢুকতে গেলে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এতে আপত্তি জানান ও বাধা হয়ে দাঁড়ান। সম্মেলনকক্ষে নির্বাচনের ব্যালটসহ অন্যান্য জিনিস রয়েছে। ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির মধ্যে তালা ভেঙে সম্মেলনকক্ষে প্রবেশ করেন তাঁরা। পরে বিএনপি সমর্থকেরা কক্ষের কাচ ভাংচুর করেন। বিকেল চারটার দিকে ভোট গণনা শুরু করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এরপর সমিতি ভবনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. আইন-আদালত
  3. সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি হাতাহাতির পর ভোট গণনায় সভাপতি–সম্পাদক দুটোই আ. লীগপন্থী

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি হাতাহাতির পর ভোট গণনায় সভাপতি–সম্পাদক দুটোই আ. লীগপন্থী

এক মাসের বেশি আটকে থাকা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে সম্পাদক পদে পুনরায় ভোট গণনা নিয়ে সমিতি ভবনের সম্মেলন কক্ষের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়। তাতে সভাপতির সঙ্গে সম্পাদক পদেও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

আইনজীবী মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্বাধীন নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত নতুন উপকমিটি বিকেল চারটা থেকে ভোট গণনা শুরু করে। রাত ১০টার দিকে ফল ঘোষণা করা হয়।

ফলাফলে সভাপতি ও সম্পাদকসহ সাতটি পদে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা। আর দুটি সহসম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ অপর সাতটি পদে জয়ী হয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থীরা।

ফলাফল অনুসারে, সভাপতি পদে সাদা প্যানেলের মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ৩ হাজার ২৪৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের মো. বদরুদ্দোজা পেয়েছেন ২ হাজার ৪৭৯ ভোট। আর সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলের আবদুন নূর ২ হাজার ৮৯১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের মো. রুহুল কুদ্দুস পেয়েছেন ২ হাজার ৮৪৬ ভোট।

সাদা প্যানেল থেকে সহসভাপতি দুটি পদে মো. শহীদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হোসেন এবং সদস্যপদে ফাতেমা বেগম, শাহাদাত হোসেন ও সুব্রত কুমার কুন্ডু জয়ী হয়েছেন। নীল প্যানেল থেকে সহসম্পাদকের দুটি পদে মাহফুজ বিন ইউসুফ ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. কামাল হোসেন এবং চারটি সদস্যপদে মাহদীন চৌধুরী, গোলাম আক্তার জাকির, মঞ্জুরুল

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সমিতির নির্বাচনে (২০২২-২৩) ভোট গ্রহণ হয়। ১৭ মার্চ ভোট গণনায় সভাপতি পদে সাদা প্যানেলের মোমতাজ উদ্দিন ফকির এগিয়ে থাকলেও সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের রুহুল কুদ্দুস এগিয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে আবেদন করেন। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে হইচই-হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামান সমিতির কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র দেন। এতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা আটকে যায়।

যেভাবে ফল ঘোষণা
গতকাল মঙ্গলবার আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ১২ এপ্রিল সমিতির কার্যকরী কমিটির মেয়াদের শেষ এক সভায় তাঁকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি নির্বাচন উপকমিটি করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় ২৭ এপ্রিল বেলা ৩টায় নির্বাচন–পরবর্তী বাকি কাজ শেষ করা হবে।

তবে আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সম্পাদক (নীল প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী) হিসেবে মো. রুহুল কুদ্দুস দাবি করেন, ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কাজেই ওই সভায় গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্ত অবৈধ।

প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আগের ঘোষণা অনুসারে আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা–সংক্রান্ত নতুন উপকমিটি সমিতির তিনতলায় অবস্থিত সম্মেলনকক্ষে ঢুকতে গেলে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। আগে থেকে সমিতির সম্মেলনকক্ষের অন্য পাশে অবস্থান নিয়ে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এই উপকমিটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে, অজি উল্লাহর নেতৃত্বে আইনজীবীরা ভোট গণনার জন্য সম্মেলনকক্ষে ঢুকতে গেলে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এতে আপত্তি জানান ও বাধা হয়ে দাঁড়ান। সম্মেলনকক্ষে নির্বাচনের ব্যালটসহ অন্যান্য জিনিস রয়েছে। ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির মধ্যে তালা ভেঙে সম্মেলনকক্ষে প্রবেশ করেন তাঁরা। পরে বিএনপি সমর্থকেরা কক্ষের কাচ ভাংচুর করেন। বিকেল চারটার দিকে ভোট গণনা শুরু করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি। এরপর সমিতি ভবনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন