মো.জাহিদ হোসেন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের যাত্রা শুরু হয় জানুয়ারি ২০২০ থেকে। কলেজের সুচনার সময় থেকে পরিপূর্ণ একটি ক্যাম্পাস ছিলো। যাতে ছিলো বৃহৎ একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবন, ছাত্র ছাত্রীদের পৃথক হল, আন্তর্জাতিক মানের অডিটোরিয়াম, নিজস্ব মসজিদ, এনিমেল শেড, প্রাণী হসপিটাল, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, কর্মচারী এবং শিক্ষকদের পূর্নাঙ্গ আবাসিক সুবিধার জন্য কোয়াটার।
প্রথম থেকে কাঠামোগত পূর্নাঙ্গ থাকলে প্রয়োজনীয় দক্ষ শিক্ষক এবং পরিচালনার দক্ষ জনবলের অভাব ছিলো।
কলেজটি ছিলো স্বতন্ত্র কলেজ যেমনটি সরকারি মেডিকেল কলেজ থাকে। তবে একাডেমিক সার্টিফিকেটের জন্য ঢাকায় অবস্থিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর ছিলো। জানুয়ারি ২০২০ এ স্বতন্ত্র ভাবে কলেজটিতে প্রথম ব্যচের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবং একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
ভেটেরিনারি শিক্ষা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি বিষয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল এবং চলমান বড় বাজেট না থাকায় শুরু থেকে সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভাবে পিছিয়ে পড়তে থাকে। করোনার মতো বড় একটা চ্যালেঞ্জ ফেস করে এর শিক্ষার্থীরা।
করোনার পরবর্তী সময়ে কলেজের মান উন্নয়নে এবং শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কোন রকম ভূমিকাই রাখতে পারিনি। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের অন্ধকারে রেখে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালের জুলাইতে সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের পরীক্ষা নিতে এবং সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
কলেজের এ দুর অবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা হয়ে পরে দিশেহারা। অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে কোন রকম সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ পরিস্থিতিতে কলেজ ভেঙ্গে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়/ ফ্যাকাল্টির দাবিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানায়। কিন্তু তৎকালীন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম দুরাবস্থা থাকা সত্যেও কোন রকম সমাধানে আসতে চাননি। বার বার মন্ত্রণালয়ে মিটিং করে এর কোন সমাধানে আসতে পারিনি দীর্ঘ ৬ মাস। এই ৬ মাস স্থবির হয়ে পরে একাডেমিক সহ সকল কার্যক্রম।
এমন পরিস্থিতিতে ৩ জানুয়ারি ২০২৩ এ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ঢাকার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ঘেরাও করে। এবং নিজেদের দাবীতে অনড় থাকে। দীর্ঘ প্রায় ৬ ঘন্টা অবরোধের পরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভাড়াটে পুলিশি বাহিনী এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর মারধর করতে থাকে। দীর্ঘ ১ ঘন্টা পুলিশের মারধর উপেক্ষা করে আন্দোলনে অনড় থাকে শিক্ষার্থীরা। ১ ঘন্টা প্রচন্ড রকম আক্রমণের পরে ছাত্রদের ধীরতায় পুলিশ বাহিরে পিছিয়ে যায় এবং ব্যপারটি সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হস্তক্ষেপ করে। পরবর্তীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কলেজটি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পাস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
আজকেই সেই ৩ জানুয়ারি। যা মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পাসের ক্যাম্পাস ডে।