কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরা সমুদ্র বেষ্টিত দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। প্রতি বছর পর্যটন মৌশুমে এই দ্বীপ ভ্রমণ করেন দেশী-বিদেশী প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ পর্যটক। ৩.৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপটি দেশের মূল ভূখন্ড থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায় যাতায়াত করতে হয় জাহাজ বা লঞ্চে। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ পূর্ণ আবহওয়ার কারণে প্রায় ৭ মাস পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকে এই দ্বীপে।
চলতি পর্যটন মৌশুমে শুরু থেকে সীমান্তে নিরাপত্তা ও নাব্যতা সংকট দেখিয়ে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ থাকার কারণে দেশের একমাত্র প্রবাল পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে। ফলে বে-কাদায় ছিলেন হোটেল রেস্টুরেন্টে মালিক সহ পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ ৩ মাস বন্ধ থাকার পর পূণরায় টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় অবকাশ যাপনে আসা দেশী-বিদেশী পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে।
পটুয়াখালী থেকে আসা সাইমুন নাহার বলেন, সেন্টমার্টিন এটা আমার প্রথম আসা। অনেক দিন থেকে আশা নিয়ে বসে আছি। সময় সুযোগ কোনোটায় হয়ে উঠছিল না। তাই এবার পরীক্ষা শেষে চলে এসেছি এই প্রবাল দ্বীপে।
আরেক পর্যটক বলেন, প্রতি বারের মতো এই জানুয়ারি মাসে ছুটে আসি এই প্রবাল দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে। ভোরের নির্মল হাওয়া উপভোগ যেন অপূর্ণতায় রয়ে যায়। তাই পরিবার -পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছি দ্বীপের নীল জলরাশিতে। খুব আনন্দ করছি।
দীর্ঘ ৩ মাস পর টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় দ্বীপ বাসী সহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা খুশি। সে সাথে সেন্টমার্টিনে পর্যটক বাড়ায় এ দু-দিনের ক্ষতির কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিয়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো আবার ও উঠে দাড়াতে পারবেন বলে মনে করেন পর্যটক ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে গতকাল বৃহস্পতিবার যাত্রী বাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে আসে। দেখা যাচ্ছে পর্যটকের বেশ আনাগোনা। সে সুবাদে আমরা অনেক আনন্দিত এবং আমরা ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হবো হবে আশাবাদী।
সেন্টমার্টিন হোটেল-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে সেন্টমার্টিন ঘুরতে আসছেন পর্যটকরা। ছুটির দিন উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুদের ভীড় দেখা যাচ্ছে। দ্বীপের হোটেল-কটেজ মালিক সমিতি সব সময়ই পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে বদ্ধপরিকর।
টেকনাফ ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, সেন্টমার্টিনে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্তা। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রতিদিন ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পর্যটকদের অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে আমরা ব্যবস্তা নিচ্ছি। সাদা পোষাকে এবং হোটেল বীচ জোন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।