ইবি প্রতিনিধিঃ দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে ছাত্র সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; কোটার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন; জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে; আমার ভাইকে মারল কেন, প্রশাসন জবাব চাই; রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; কোটা না মেধা, মেধা মেধা; মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম কিছু গতকালকে আমরা দেখতে পেয়েছি দেশের বিভিন্ন স্থানে আমার ভাইবোনদের উপর ছাত্রলীগের পেটোয়া বাহিনী বর্বরোচিত, ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। আমরা পাকিস্তানি বাহিনীর বিপরীতে শহীদ শামসুজ্জোহা স্যারকে পেয়েছিলাম কিন্তু এই আন্দোলনে আমরা আমাদের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রাধক্ষ্যবৃন্দ কাউকেই পায়নি যা অত্যন্ত হতাশাজনক। অনতিবিলম্বে আমরা ছাত্রলীগের হামলায় বিচার চাই।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের জানের ভয় নাই, আমরা জানের মায়া ত্যাগ করে ১ ঘন্টার নোটিশে আসছি। গতকাল রাতে আমাদের কেউই ঘুমাতে পারে নাই কারণ আমাদের ভাইয়েরা রক্তাক্ত হয়েছে। এসময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কেও উত্তেজিত হয়ে হামলা, মারামারি বা রাস্তা অবরোধের দিকে যাবেন না। রাস্তা বন্ধ করা আমাদের কাজ না, আমরা কোন ধ্বংসাত্মক কাজ করার সংগঠন না। ন্যায্য দাবীতে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে, চলবে৷
এসময় সমাবেশে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল। তিনি বলেন, আমি অবশ্যই তোমাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। তবে আমি মনে করি আদিবাসি, প্রতিবন্ধীর মতো কিছু কিছু জায়গায় কোটা থাকা দরকার। এখানে হতে পারে যে নানা কারণে নানাজন সংশ্লিষ্ট আছে কিন্তু আমাদের মূলত যে দাবি বেকারত্বের সংকট ঘোচানো। ছাত্ররা এই ন্যায্য দাবীতে মাঠে রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।