সংবাদ প্রকাশের পর আইডি নম্বর পেলেন জবির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা
জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম বর্ষের (১৮তম আবর্তন) শিক্ষার্থীদের আইডি নম্বর ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করার পর মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগ থেকে আইডি নম্বর জানতে পারে। এতে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে খুব দ্রুত তাদের হাতে হার্ড কপি তুলে দেয়ার দাবিও জানানা তারা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের তাদের প্রায় আড়াই মাস আগে ২০২২-২০২৩ সেশনে ভর্তি হলেও এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের মূল কপি হাতে পাননি। চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলেও এখনও তাদের আইডি কার্ড সরবরাহ করা হয়নি। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগে দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষাও শুরুর তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় আড়াই মাস পর এক সেমিস্টার শেষের পথে থাকলেও আইডি কার্ড হাতে না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রিন্ট এর কাজটি করতো রেজিস্ট্রার দপ্তর। তবে এখন আইটি সেলকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অনুমতি ব্যতীত কাজটি করতে পারবে না। আর এই দীর্ঘ সময়েও কোনো দপ্তরই আইডি কার্ড প্রিন্ট এর উদ্যোগ নেয়নি। এ সমন্বয়হীনতার ফলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর কেউই আইডি কার্ডের হার্ড কপি পায়নি।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। গণপরিবহনে ভ্রমণসহ বিভিন্ন কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে ছাত্র সুবিধা না নিতে পারায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সমাজকর্ম বিভাগের সেলিম ভূইয়া নামের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড না থাকায় বাসে হাফ পাশ দিতেও সমস্যা হয়। আমাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে কেউ বিশ্বাসই করতে চায় না। সফট কপি প্রিন্ট করে লেমিলেটিং করলে অনেক সময় তা মানতে চায় না। আমাদের এতো দিন হয়ে গেলো, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের আইডি কার্ড হাতে দিতে পারলো না। এটা এই বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে খুব কষ্টের একটা বিষয়।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান মুনিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডটা আমাদের খুবই প্রয়োজন। এখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এই সময়ে অন্তত আইডি কার্ডটা থাকলে আমাদের কিছুটা হলেও রেহাই মিলতো।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সালসাবিল ইসলাম প্রত্যাশা বলেন, অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বাস চলে না। আমাদের লোকাল বাসে আসতে হয়। সেক্ষেত্রে আইডি কার্ডটার প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করি।
স্বস্তি জানিয়ে আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী তিথী ইসলাম বলেন, আইডি নম্বর পেয়েছি। এখন বৃত্তির কাগজপত্র জমা দিতে পেরেছি। খুব দ্রুত আইডি কার্ডটা দিয়ে দিলে চলাফেরায় সমস্যা দূর হতো।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আইডি নম্বর একাডেমিক শাখায় পাঠানো হয়েছে। তারা প্রতিটি বিভাগ ও ইন্সটিটিউটে পাঠিয়ে দিবে। আশা করছি খুব শীগ্রই শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ডও নিজ নিজ বিভাগ থেকে সংগ্রহ করতে পারবে।”
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “শিক্ষার্থীদের আইডি নম্বর দেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে। বৃত্তির কাগজপত্রের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।”