সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে সারা দেশে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব পদে আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী। সে হিসাবে ১টি পদের জন্য প্রতিযোগিতা হবে ২৯ প্রার্থীর মধ্যে। এ নিয়োগ পরীক্ষার তারিখও প্রায় চূড়ান্ত। আগামী এপ্রিলের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হবে। হাতে সময় নেই বললেই চলে। তাই চাকরিপ্রত্যাশীদের শেষ সময়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
যেহেতু সময় কম, তাই সব বিষয় না পড়ে শুধু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পড়তে পারেন। যেসব বিষয়ে বারবার প্রশ্ন আসে, সেই বিষয়গুলোতে চোখ রাখা দরকার। বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ সমাধান করতে হবে। বিশেষ করে ২৪-৪৩তম বিসিএসের প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করলে পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের প্রশ্নগুলো বারবার অনুশীলন করতে হবে। তাহলে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। চাকরির প্রস্তুতির জন্য সহায়ক প্রথমা প্রকাশনীর মাসিক ম্যাগাজিন চলতি ঘটনা: বাংলাদেশ ও বিশ্ব থেকে প্রাথমিকে চাকরির পরীক্ষার মডেল টেস্টগুলো অনুশীলন করতে পারেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পঞ্চম-দ্বাদশ বাংলা প্রথম পত্রের সাহিত্যিক পরিচিতি এবং তাঁদের লেখাগুলো পড়তে পারেন। নবম-দশম শ্রেণির নতুন ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ অনুশীলনের প্রশ্নগুলোও একপলক দেখে নিতে পারেন। এ ছাড়া এনসিটিবির ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির ব্যাকরণ বই অনুশীলন করতে পারেন। বর্ণ বা ধ্বনি, দ্বিরুক্তি শব্দ, সন্ধি, কারক ও বিভক্তি, সমাস, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, শব্দ, বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ, এককথায় প্রকাশ, বাগ্ধারা, প্রবাদ-প্রবচন, পদ প্রকরণ, উপসর্গ ও অনুসর্গ, যতিচিহ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইংরেজির জন্য টেনস, প্রিপজিশন, পার্টস অব স্পিচ, ভয়েস, ন্যারেশন, স্পেলিং, বাক্য সংশোধনের নিয়ম ও রাইটস ফর্ম অব ভার্ব জানতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ইংরেজি বাগ্ধারা, সমার্থক শব্দ ও বিপরীত শব্দ মুখস্থ করতে হবে। ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়তে হবে। সহায়ক বই হিসেবে এনসিটিবির ষষ্ঠ-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি গ্রামার বই পড়া যেতে পারে।
পাটিগণিত ও বীজগণিত অনুশীলনের জন্য পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণির গণিত বোর্ড বই অনুশীলন করলে সব প্রশ্নের উত্তর সহজ হবে। জ্যামিতিক অংশে রেখা ও কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত, ত্রিকোণমিতি ও পরিমিতি পরীক্ষায় আসে। এসব বিষয় অনুশীলনের জন্য ষষ্ঠ-নবম শ্রেণির বোর্ড বইয়ের জ্যামিতিক অংশ অনুশীলন করলে ভালো করা যায়। আর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় আসা গণিত নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নগুলো যেকোনো টেস্ট পেপার থেকে অনুশীলন করা যেতে পারে। গণিতের জন্য ক্যালকুলেটর ছাড়া অনুশীলন করতে হবে। চলতি ঘটনার গণিতের পর্ব অনুশীলন করতে পারেন, আর বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার সমাধানসহ যা থাকে, তা অনুশীলন করতে পারেন।
সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ধরে ধরে অনুশীলন করলে ভালো করা যাবে। এ জন্য নবম-দশম শ্রেণির জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, ভূগোল ও পরিবেশ, অর্থনীতি, পৌরনীতির বিষয়গুলো পড়তে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর জন্য অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীন ভালোভাবে পড়তে হবে। আমাদের সংবিধান সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।
সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য পঞ্চম-নবম শ্রেণির এনসিটিবির বিজ্ঞান বই পড়তে হবে। ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির এনসিটিবির আইসিটি বোর্ড বইটি অনুশীলন করলে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরীক্ষার কেন্দ্রে ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত হতে হবে। উত্তরপত্রে নিজ জেলা, উপজেলা/থানা, রোল নম্বর, সেট কোড সঠিকভাবে লিখতে হবে। ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও এসব তথ্য পূরণে ভুল হওয়ার কারণে চাকরিটা হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
পরীক্ষার প্রশ্নে অনেক সময়ে উত্তর ভুল অথবা না–ও থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে উত্তর না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পরীক্ষায় প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যায়। তাই আন্দাজে উত্তর না দেওয়াই ভালো। পড়ার টেবিলে বসে অতিরিক্ত ফেসবুক, মেসেঞ্জার বা ইউটিউবে সময় দেওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে মাথা ঠান্ডা রেখে প্রশ্ন পড়ে উত্তর দিয়ে বের হতে হবে।