আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় যাবৎ ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামীলীগ সরকার। ২০০৮ সালে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা লাভের পর থেকে এদেশের আপামর জনসাধারণের আস্থা ও আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে উন্নয়ন-সমৃদ্ধির মাধ্যমে দেশকে বিশ্ব দরবারে নতুনরূপে পরিচিতি দান করেছে শেখ হাসিনা সরকার। অন্যদিকে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ব্যাপক দুর্নীতি, হত্যা, খুন, ধর্ষণের মাধ্যমে দেশকে বিশ্ব মাঝে প্রথম স্থানে নিয়ে গিয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকার তথা আওয়ামী সরকারের নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বিশ্ব মাঝে উন্নয়নের রোল-মডেল হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপ ও ভিশন-মিশন বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে এদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন ও তার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ দক্ষ হয়ে উঠছে দিন দিন। গ্লোবালাইজেশন ও প্রতিযোগিতার বিশ্বে নিজেদের সক্ষমতা অর্জনে এই সরকার অবদান অনস্বীকার্য।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের ভ্রাতৃপ্রেমী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে সময়ের প্রয়োজন ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শিক্ষার্থীবান্ধব ও শিক্ষার্থীদের সংগঠন হিসেবে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় সংকট-সমস্যা সমাধানে কাজ করাই এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও এদেশের সাধারণ মানুষের যৌক্তিক দাবি ও অধিকার আদায়ে এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে এদেশের ক্রান্তিলগ্নে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। ২০২০ সালের শুরুতে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর প্রভাব বাংলাদেশও ছড়িয়ে পরে। করোনায় মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজনরা যেখানে লাশ ধরতে সঙ্কোচবোধ করেছে সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে মৃত ব্যক্তিদের দাফন-কাফন সম্পন্ন করেছে। অক্সিজেন সংকট মোকাবেলায় “জয় বাংলা অক্সিজেন ” সেবা চালু করে মুমূর্ষু রোগীদের পাশে থেকেছে।
কৃষক তার পাকা ফসলী জমির ধান কাটতে শ্রমিকের অভাববোধ করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কৃষকের পাশে থেকে তাদের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। ইতিবাচক কাজের ব্রান্ড এম্বাসোডর হিসেবে ছাত্রলীগ কাজ করছে নিরবধি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি শিক্ষার্থীবান্ধব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংগঠন। ক্যাম্পাসভিত্তিক রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন মহানগর, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক রাজনীতির বিস্তৃতি রয়েছে। সকল ইতিবাচক কাজের ব্রান্ড এম্বাসোডর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি তথা ছাত্রলীগের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেধা যাচাই-বাছাই ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে নিজের আসন নিশ্চিত করে মেধাবীরা পড়াশোনার সুযোগ পায়। বলা হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতির বিবেক। তাই ছাত্রলীগের মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের মেধার স্বাক্ষর এদেশের জাতীয় রাজনীতি, প্রশাসন, বিচার, শাসন বিভাগ সহ সকল কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনা আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশসহ একটি স্মার্ট দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে নবপরিচয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রত্যাশিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিরলস ও মেধাভিত্তিক, প্রতিযোগিতামূলক কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রত্যাশিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিজের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে ১.স্মার্ট সিটিজেন ২.স্মার্ট ইকোনমি ৩.স্মার্ট গভর্নমেন্ট ৪.স্মার্ট সোসাইটি।
চারটি শর্তের প্রথম ও প্রধান শর্ত স্মার্ট সিটিজেন। আর স্মার্ট সিটিজেন গড়ার কারখানা হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।দক্ষ,কারিগরি, সুশিক্ষা অর্জন করে পরবর্তী জীবনে এর প্রতিফলন ঘটাবে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে সে লক্ষ্যে গঠন করতে সহায়তা করবে। ছাত্রলীগের কর্মীরা শুধু রাজনৈতিক কর্মকান্ডেই নয় বরং সর্বস্তরের পেশায় তার নৈতিক, আদর্শিক ও যোগ্যতার প্রমাণ রেখে দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। স্মার্ট প্রত্যয়টি সাধারণ অর্থে আমরা যেমন ব্যবহার করে থাকি যে পোশাক পরিচ্ছদ বা দৈহিক চাকচিক্য বিষয়টিকে বুঝি প্রকৃত অর্থে স্মার্ট মানে হচ্ছে আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, কর্মদক্ষতা, নৈতিকতা, চিন্তা-চেতনায়, মানসিকতায় অগ্রগামী হওয়াকে বুঝায়। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জায়গা থেকে স্মার্ট হয়ে উঠলে এর প্রভাব তার কর্মদক্ষতা বা কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে যাবে যা স্মার্ট ইকোনমি অর্জনে ভূমিকা রাখবে।কাজে-কর্মে, মানসিকতায় স্মার্ট হয়ে উঠলে এর ইতিবাচক প্রভাব সরকার ব্যবস্থায় অনন্য ভূমি রাখবে বা স্মার্ট গভর্নমেন্ট তৈরিতে সহায়তা করবে।
আর এর ফলে গোটা দেশে একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠবে যা আগামীর বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আর আগামীর বাংলাদেশ নির্ভর করছে বর্তমান ছাত্র ও তরুণদের উপর। তাই শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাসহ সকল ইউনিটের নেতাকর্মীদের স্ব স্ব জায়গা থেকে স্মার্ট প্রত্যয়টি ধারণ করতে হবে এবং সেলক্ষ্যে সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই শেখ হাসিনার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
লেখকঃ তুষার মাহমুদ, সভাপতি, বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগ, জবি।