The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

শেকৃবির এএসভিএম অনুষদের নতুন ডিন প্রফেসর ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএসভিএম) অনুষদের নতুন ডিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেডিসিন এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ও পোষা প্রাণী চিকিৎসক প্রফেসর ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম।

গত ৩০ এপ্রিল ২০২৩ইং, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে অধ্যাপক ড. কেবিএম সাইফুল ইসলামকে এই দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অফিস আদেশে বলা হয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১ এর ২৫(৫) এর উপ-ধারা মোতাবেক সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে ৩০ এপ্রিল হতে এএসভিএম অনুষদের ডিন হিসেবে পরবর্তী ২ বছরের জন্য তাকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

তাঁর জন্মস্থান মাদারীপুর সদর উপজেলায়। তিনি জাপান সরকারের মনবুকাগাকুশো বৃত্তি নিয়ে জাপানের ইম্পেরিয়াল শ্রেণীভুক্ত কৃষি ও প্রানিচিকিৎসা শিক্ষা প্রদানকারি বিশ্ববিদ্যালয় হক্কাইডো ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োসিস্টেম সাস্টেইনাবিলিটি (মাইক্রোবায়োলজী) তে ২০০৮ সালে এমএস এবং ২০১১ সালে পি এইচ ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে ১ম শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করে ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রী অর্জন করেন।পরবর্তীতে ২০০৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম শ্রেণীতে এমএস ইন মেডিসিন ডিগ্রী অর্জন করেন।

এছাড়াও তিনি ২০০৬ সালে ডেনমার্কের দা রয়্যাল ভেটেরিনারি এন্ড এগ্রিকালচারাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং ২০১৬ সালে ন্যাশনাল ভেটেরিনারি স্কুল অফ প্যারিস, ফ্রান্স এর পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। দেশ বিদেশের বিভিন্ন সাময়িকী ও সম্মেলনে তার ৬৯টি গবেষণা প্রকাশনা রয়েছে। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ১৫ টিরও বেশি বিজ্ঞান সাময়িকীর সম্পাদনা পরিষদ ও ৫০ টিরও বেশি বিজ্ঞান সাময়িকীর রিভিউ বোর্ডের সদস্য।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে তিনি বাংলাদেশের একমাত্র প্রাণীসম্পদ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রানীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

প্রানি চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রফেসর ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম এ পর্যন্ত ২৬ বার দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার, স্বীকৃতি ও বৃত্তি অর্জন করার বিরল গৌরব অর্জন করেছেন যার মধ্যে আর্ন্তজাতিক পূরস্কার, স্বীকৃতি ও বৃত্তি রয়েছে ১৭টি।

এরমধ্যে হক্কাইডো ইউনিভার্সিটির এম্বাসেড্রর-পার্টনার প্রোগ্রামের অধীনে হক্কাইডো ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট কর্তক ২০২২ সালে “পার্টনার অফ হক্কাইডো ইউনিভার্সিটি অফ জাপান ইন বাংলাদেশ” হিসেবে নিযুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে ২০২০ সালের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এনিমেল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইনোভেটিভ রিসার্চ এওয়ারর্ড-২০২০ অর্জন, জাপান সরকারের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অধীনে ২০২০ সালে গ্লোবাল এডুকেশন প্রোগ্রাম ফর এগ্রিসায়েন্স ফ্রন্টিয়ার গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের একমাত্র বাংলাদেশী প্রোগ্রাম ফেলো হবার বিরল সম্মান অর্জন, ২০১৯ সালে হক্কাইডো ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট স্কুল অফ এগ্রিকালচার এর ডিভিশন অফ ফান্ডামেন্টাল এগ্রিসায়েন্স রিসার্চ গ্রুপের অধীনস্থ গবেষণাগারে “ভিসিটিং রিসার্চ স্কলার” এর সম্মান অর্জন, ২০১৭ সালে ফ্রান্সের ন্যাশনাল ভেটেরিনারি স্কুল অফ এলফোর্ড (ENVA) কর্তৃক “ভিজিটিং স্কলার” এর সম্মান অর্জন, বাংলাদেশের একমাত্র ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে পরপর তিন বার আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে ২০১৫ সালে ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সে এবং ২০১৬ সালে মালয়েশিয়াতে “কি ওপিনিয়ন লিডার এর স্বীকৃতি অর্জন, থাইল্যান্ডের পাতায়াতে ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত “ফিফথ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সাসটেইনেবল এনিমেল এগ্রিকালচার ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজ” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৪১ দেশের ৪৫০ জনেরও অধিক তরুন বিজ্ঞানিদের মধ্য থেকে ইয়াং সায়েটিস্ট এওয়ারর্ড-২০১৫ অর্জন, চীনের বেইজিং এ অনুষ্ঠিত “সেকেন্ড কনফারেন্স অন ব্যাকটেরিওলজি শীর্ষক আর্ন্তজাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে ২০১৪ সালে আমেরিকান সায়েন্টিফিক রিসার্চ, ওপেন এক্সেস লাইব্রেরি ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনফরমেশন ইন্সটিটিউট কর্তৃক যৌথভাবে প্রদত্ত তরুণ গবেষক পূরস্কার-২০১৪ অর্জন, জাপানের সাপ্পোরো তে ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ মাইক্রোবায়োলজিক্যাল সোসাইটির কংগ্রেসে ৬১ দেশের ৪৩০০ জনেরও অধিক বিজ্ঞানিদের মধ্য থেকে এশিয়ার ইয়াং ল্যাব সায়েন্টিস্ট ২০১১ অর্জন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও তিনি ডিভিএম পরীক্ষায় ১ম শ্রেনিতে ১ম হওয়ায় মেধা পুরস্কার স্বর্ণপদক লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি তার মেধার স্বাক্ষর রেখে প্রাথমিক বৃত্তি ও জুনিয়র ট্যালেন্টপুল বৃত্তি লাভ করেন।

তিনি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি); বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ); বঙ্গবন্ধু ভেটেরিনারি পরিষদ (বিভিপি); বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ (বিকৃবি); বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটি (বিএলএস); বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ভেটেরিনারি এডুকেশন এন্ড রিসার্চ (বিএসভিইআর); বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন নেটওয়ার্ক (বিএইএন); ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ (ওএইচবি); বাংলাদেশ ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (বিডিডিএফ); দি ভেট এক্সিকিউটিভ (টিভিএক্স); জাপানিজ ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (জেইউএএবি); চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমাল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন (সিভিআএসিউএএ); গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্ট (জিএনবিবি), ইউএসএ; হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন (এইচইউএএ), জাপান; সায়েন্টিস্ট সলিউশন (এসএস), ইউএসএসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক সংগঠনের এর আজীবন সদস্য। পাশাপাশি তিনি বিএলএস, ওএইচবি, বিএসভিইআর, বিডিডিএফ, বিএইএন এর কার্যনির্বাহী পরিষদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) এর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সাংঘঠনিক সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোকিত মানুষ এর চীফ মডারেটর, পোল্ট্রি প্রফেশনাল বাংলাদেশ-শেকৃবি ইউনিটের উপদেষ্টা, স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন শেকৃবি ইউনিটের উপদেষ্টা, ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, শেকৃবি’র মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত।

নবনিযুক্ত ডিন প্রফেসর ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অনুষদীয় ডীন একটি অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণপদ। বিশেষ করে এনিমেল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের মত টেকনিক্যাল এবং প্রায়োগিক শিক্ষা প্রদানকারী অনুষদের ডিনের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের পরিধি ব্যাপক। ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমার চেষ্টা থাকবে অনুষদীয় শিক্ষার্থীদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্য তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করার ব্যবস্থা করা। এই অনুষদের একজন স্নাতক যাতে সারা বিশ্বের যে কোন স্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারে এরকম শিক্ষার পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা।

অনুষদীয় সকল শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমি আমার অনুষদকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই, যেটা বাংলাদেশের অন্যান্য ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.