The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

শীতের শুরুতে শিশুদের যত্ন: ছোট্ট সোনামণির সুস্থতার জন্য খেয়াল রাখুন ৯টি বিষয়

গরম শেষে শীতের শুরুতে যখন আবহাওয়ার বদল শুরু হয়। বছরের এ সময়টায় শিশুদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। শীতে শিশুরা সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, জ্বর,শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়। সঙ্গে ত্বকের নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আবহাওয়া শুষ্ক ও ধুলাবালু থাকার কারণেই মূলত শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হয়। শীতের সময় ভেবে আমরাও শিশুদের পানি ধরতে দেই না, বাইরে খেলতে যাওয়া বন্ধ করে দেই, এমনকি খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারেও বেঁধে দেই অনেক নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু আসলেই কি শিশুদের সুস্থ থাকার জন্য এত নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে? এ সময়ে অভিভাবকদের কিছুটা সাবধানতাই পারে শিশুকে সুস্থ রাখতে।

শীতে শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন কীভাবে?

১) শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশুদের গোসল করাতে চান না অনেকেই। কিন্তু গোসল না করলে শরীর আর চুলে ধুলো লেগে থাকবে যা শিশুর জন্য মোটেই ভালো নয়। এক্ষেত্রে গোসলের সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে বেবি সোপ। এ ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহারে শিশুর চোখ জ্বালা করবে না, সঙ্গে মাথার ত্বক পরিষ্কার হবে এবং চুল ভালো থাকবে। অনেকেই শিশুকে জবজবে করে শর্ষের তেল মাখিয়ে গোসল করিয়ে থাকেন। এতে গোসল শেষেও শিশুর চুল ভেজা থাকে এবং ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

https://therisingcampus.com/২)  শিশুদের হালকা কুসুম গরম পানি পান ও ব্যবহার করানো উচিত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত ব্রাশ করা, হাত-মুখ ধোয়া, খাওয়াসহ শিশুদের নানা কাজে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করলে এ সময় শিশুরা ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে।

https://therisingcampus.com/৩) শিশুদের ঠান্ডা বাতাস এবং ধুলাবালু থেকে দূরে রাখতে হবে। যেহেতু শীতে এ রোগগুলো বেশি দেখা দেয়, তাই যতটা সম্ভব শিশুদের জনসমাগমপূর্ণ জায়গায় কম নেওয়াই ভালো। শিশুদের স্কুলে অথবা বাইরে নিয়ে গেলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার অভ্যাস করাতে হবে।

৪) শিশুদের অবশ্যই শীতের পোশাক পরিয়ে রাখা উচিত। তবে শিশুদের সরাসরি উলের পোশাক পরানো ঠিক নয়। এতে উলের ক্ষুদ্র লোমে শিশুদের অ্যালার্জি হতে পারে। হালকা শীতে শিশুদের গরম পোশাকটি খুব বেশি গরম কাপড়ের হওয়া উচিত নয়। কারণ, খুব বেশি গরম কাপড় পরালে গরমে ঘেমে শিশুর ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।

https://therisingcampus.com/৫) শীতের সময়টা শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ফলে তাদের শরীর খারাপ হয়ে যায়। তাদের ঘন ঘন পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। শিশুদের ডিমের কুসুম, সবজির স্যুপ এবং ফলের রস খাওয়ানো উচিত। বিশেষ করে গাজর, বিট, টমেটো শিশুদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়াতে পারেন।

৬) শীতের সময় শিশুদের ঠান্ডা খাবার পরিবেশন থেকে বিরত থাকুন। ফ্রিজে থাকা যে কোনো খাবার দেওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে গরম করে নিতে হবে। সম্ভব হলে দিনে অন্তত একবার স্যুপ, গরম পানি, গরম দুধ, খাওয়াতে হবে। এতে শিশুর শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডার সমস্যা থাকলে আরাম মিলবে। সঙ্গে ভিটামিন-সি যুক্ত ফল অবশ্যই খাওয়াতে হবে।

৭) শিশুদের রোগের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে অনেক কিছু করার পাশাপাশি নজর রাখতে হবে শিশুর ত্বকের দিকেও। ত্বক শুষ্ক, ঠোঁট ফাটা বা হাতে-পায়ে-আঙুলের ফাঁকে চুলকানির মতো সমস্যা হচ্ছে কিনা এসব দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের ত্বক কোমল রাখার জন্য দুধ, অলিভ অয়েল ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বেবি লোশন ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো।

https://therisingcampus.com/৮) অসুস্থ হয়ে যাবে এই চিন্তায় শীতের সময় শিশুদের খেলাধুলার বদলে কম্বলের নিচে থাকার পরামর্শই বেশি দেন বড়রা। কিন্তু এটা তাদের জন্য মোটেই উপকারী নয়। এ সময় খেলাধুলা কমিয়ে দিলে শরীরের ভেতর যে কোষগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেগুলো দুর্বল হতে থাকবে। তাই পর্যাপ্ত খেলাধুলা করা এ সময় অবশ্যই জরুরি।

৯) শীতে পানির পিপাসা কম লাগে। তাই শিশুদেরও পানি পানে বেশ অবহেলা দেখা যায়। কিন্তু অভিভাবক হিসেবে আপনার মনে রাখতে হবে, এ সময়েও শিশুর শরীরে পর্যাপ্ত পানি প্রবেশের প্রয়োজন আছে। তাই সময়মতো শিশুকে পানি পান করাতে একদম ভুলবেন না।

ডা. মো ফরিদ উদ্দিন, এমবিবিএস (ঢাবি), সিসিডি (BIRDEM), এম এস সি (UK), ফেলোশিপ ট্রেনিং ডায়াবেটিস – সিএমসি হাসপাতাল, চেন্নাই, ভারত।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.