বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমন নিয়ন্ত্রণে এবার ভিসার আবেদন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের জন্য সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। শুক্রবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে এই তথ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের অবশ্যই ন্যূনতম ২৯ হাজার ৭১০ অস্ট্রেলীয় ডলারের বাংলাদেশি মুদ্রায় (২১ লাখ ৪৬ হাজার ৯২২ টাকা) সমপরিমাণ অর্থ সঞ্চিত থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই সঞ্চিত অর্থ সংক্রান্ত ব্যাংক নথি প্রদর্শন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদনে যেসব কাগজপত্র-নথি সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক, সেসবের মধ্যে ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ বিষয়ক নথিও অন্তর্ভুক্ত। এই নথি অন্তর্ভুক্ত করা না হলে আবেদন গ্রহণ করার নিয়ম নেই।
অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনের জন্য আগে প্রদর্শনযোগ্য সঞ্চিত অর্থের বাধ্যবাধকতা ছিল ন্যূনতম ২১ হাজার ৪১ অস্ট্রেলীয় ডলার, পরে ২০২৩ সালের অক্টোবরে তা বৃদ্ধি করে ২৪ হাজার ৫০৫ অস্ট্রেলীয় ডলারে উন্নীত করা হয়। সেই হিসেবে এবার দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো হলো প্রদর্শনযোগ্য সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি বিবৃতিতে।
প্রসঙ্গত, কানাডার মতো অস্ট্রেলিয়ারও বিদেশি মুদ্রা উপার্জনের একটি বড় খাত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খাত থেকে ৩৬ হাজার ৪০০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার আয় করেছে দেশটি।
করোনা মহামারির পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আগমনের হার বেড়েছে। তবে এই শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই পড়াশোনা শেষে সেখানে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন। মহামারির আগে যেসব শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন, তাদেরও একটি বড় অংশ আর নিজ দেশে ফেরত যাননি। ২০২৩ সালের গোটা বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছেন রেকর্ড ৫ লাখ ৪৮ হাজার ৮০০ জন শিক্ষার্থী। দেশটির ইতিহাসে এর আগে এক বছরে এত বেশি সংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর আগমণ ঘটেনি।
এই বিপুল সংখ্যক অভিবাসী আগমনের সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশটির আবাসন ব্যবস্থায়। আবাসন ব্যায় দিন দিন বাড়ছে অস্ট্রেলিয়ায়, ফলে নাগরিকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এর আগে গত মার্চে ভিসা আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় আবশ্যিক দক্ষতা বৃদ্ধির শর্ত দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার সরকার। সেই সঙ্গে ডিগ্রি অর্জনের পর দীর্ঘসময় অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের নিয়মও বাতিল করেছিল।
সূত্র : রয়টার্স