নাইমুর রহমান: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুনগতমান ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছেন শিক্ষার্থীরা। সাথে যুক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির স্লোগান, ” শিক্ষা, ঈমান, শৃঙ্খলা ” আর এটি ধারণের ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে এমনই প্রত্যাশা তাদের। জবি শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের ভাবনা এক করে তুলে ধরেছেন দ্যা রাইজিং ক্যাম্পাসের জবি প্রতিনিধি নাইমুর রহমান।
পুরান ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২০শে অক্টোবর এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৮ তম থেকে ১৯ তমতে পদার্পণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে জাকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজন করা হবে যেখানে সিনিয়র জুনিয়র সকল শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবে। আনন্দের সাথে দিনটিকে উদযাপন করবে। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ল্যাবের সুযোগ সুবিধা চায় যাতে শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ পায়। গবেষণার মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম যেন দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। লাইব্রেরি,আবাসন, ক্যাফেটেরিয়া সহ সকল সুযোগ সুবিধা চাই। সর্বোপরি, রাজনীতিমুক্ত, র ্যাগিং মুক্ত একটি স্বচ্ছ সুন্দর ক্যাম্পাস চাই।
সাবরিনা জাহান, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: নতুন প্রজন্মের আশা ও অপেক্ষা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় – মাত্র একটি নাম নয়, এটি একটি স্বপ্ন, একটি আকাঙ্ক্ষা, একটি জাতির উন্নয়নের প্রতীক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে নবীন শিক্ষার্থীরা যে অপার আশা নিয়ে প্রবেশ করে, তার কারণ অত্যন্ত গভীর। একজন শিক্ষার্থী জগন্নাথে আসে শুধু ডিগ্রি নিতে নয়, বরং জ্ঞানের সাগরে ডুব দিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে, সমাজের জন্য কাজ করার মতো মানুষ হয়ে উঠতে।
”বিপ্লবে বলিয়ান নির্ভীক জবিয়ান” এই স্লোগানকে সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পালন করছে ১৯ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। জগন্নাথের প্রতিটি জন্মদিনেই আমরা নতুন এক সূর্যোদয়ের আশা করি। এই আশা, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো উন্নত করার, আরো সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন করার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা কি সত্যিই জগন্নাথকে সেই সব কিছু দিতে পারছি যা তার প্রাপ্য?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা একটি বিষয় স্পষ্টভাবে অনুভব করি, সেটি হলো, এই বিশ্ববিদ্যালয় তার সম্ভাবনার তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। বিশেষ করে আবাসনের ক্ষেত্রে এই ঘাটতি বেশি চোখে পড়ে। ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ শব্দটিতেই ‘বিশ্ব’ শব্দটি আছে। তাহলে কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা আসবে না? কেন এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের গবেষণা কেন্দ্র হয়ে উঠবে না?
আমরা চাই জগন্নাথের ক্লাসরুমগুলো যেন আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সজ্জিত হয়। আমরা চাই এই বিশ্ববিদ্যালয় যেন গবেষণার জন্য একটি উর্বর ভূমি হয়ে ওঠে। আমরা চাই জগন্নাথ যেন একদিন বাংলাদেশের শিক্ষার আলোকস্তম্ভ হয়ে উঠে।
আমরা জানি, পরিবর্তন আনতে সময় লাগে। কিন্তু আমরা আশাবাদী যে, আমাদের এই আকাঙ্ক্ষা একদিন বাস্তবে রূপ পাবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি স্বপ্ন, একটি আশা, এবং একটি ভবিষ্যৎ।
হুমাইরা বিনতে হক, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২০ অক্টোবর। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র সদরঘাটে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অল্প সময়েই এটি অর্জন করেছে অসংখ্য সাফল্য ও গৌরব। “শিক্ষা, ঈমান, শৃঙ্খলা” এই মূলমন্ত্র ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়টি এগিয়ে চলছে তার স্বকীয়তা ও গৌরবের পথে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমার কাছে যেন নিজের জন্মদিনের মতোই আবেগের। যেমন করে প্রতি বছর জীবন থেকে একটি করে দিন চলে যায়, তেমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনেরও প্রতিটি দিবস যেন একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি। এই দিনটি মনে করিয়ে দেয় ক্যাম্পাস জীবনের অসংখ্য রঙিন মুহূর্তের স্মৃতিকে, যেখানে আনন্দ, হাসি, বন্ধুদের সাথে কাটানো সময়—সবকিছু মিশে থাকে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, যদিও ছোট্ট একটি ক্যাম্পাস, তবুও এখানে মেলে প্রাণের উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা। প্রায় ৩০ একরের এই প্রাঙ্গণে আয়োজিত যেকোনো অনুষ্ঠান থাকে বিশেষ আবেগঘন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আয়োজন যেন অন্য সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায়। এদিনের বিশেষত্ব, অনুষ্ঠানমালা, শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় পুরো ক্যাম্পাস যেন এক নতুন প্রাণ পায়।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস শুধু একটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নয়; এটি প্রতিটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীর কাছে একটি স্মৃতিময় দিন। এদিনটি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীতের ঐতিহ্য, গৌরবময় অধ্যায়গুলোকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসও তার ব্যতিক্রম নয়। ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণ যেন মনে করিয়ে দেয় অতীতের স্মৃতি আর সাফল্যের গল্প।
ছোট্ট এই ক্যাম্পাসটিতে নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া, নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সঞ্চার এবং সেসব স্মৃতির সংরক্ষণ, সবকিছু মিলিয়েই আমার কাছে এটি একটি স্বপ্নের মতো। আর এই স্বপ্নের জায়গার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আনন্দ ও আমেজের যেন শেষ নেই।
আমার কাছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস তাই আমার জন্য সবচেয়ে আনন্দময় একটি দিন। আমি প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাই আমার প্রিয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে, আর কামনা করি, এর প্রতিটি বছরই যেন গৌরবময় সাফল্যে ভরে ওঠে।
আয়েশা সিদ্দিকা, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
টিবি, দ্যা রাইজিং ক্যাম্পাস।