The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪

শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে অতি দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলুন

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড—বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ উক্তি কেবল প্রবাদের মধ্যেই বিরাজমান। কারণ, এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারঘাট খোলা কিংবা বাণিজ্য মেলা চলছে, সেই স্বাস্থ্যবিধির আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন খোলা রাখা যায় না? পাশাপাশি এটাও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করলেই যে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ হয়ে গেল, তা কিন্তু নয়। কেননা, প্রত্যেক শিক্ষার্থীই একটি পরিবারের সদস্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে হয়তো সেই শিক্ষার্থী বাড়িতে থাকবে, কিন্তু তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঠিকই বাইরে যাচ্ছেন। সেখান থেকেও অসুস্থ হতে পারে, সুতরাং শিক্ষার্থীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে থেকেও নিরাপদ নয়।

ইতিমধ্যেই ইউনিসেফ প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় স্কুল বন্ধ রেখেছে, এমন ১৪টি দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ। এ পরিসংখ্যানের প্রভাব বেশ ভয়াবহ ও বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ, প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে সঙ্গেই এর তাৎক্ষণিক প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনেক শিক্ষার্থীই ফেরেনি শ্রেণিকক্ষে। দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে, বেড়েছে শিশুশ্রম।

বাংলাদেশকে আঘাত করা করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সহজে বলা যায়, আগামী দুই কিংবা তিন সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই আগামী দু-তিন মাস এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে আবারও একটা বড় সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অমিক্রনের প্রভাবে সরকারি আদেশে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছুটি না কাটতেই নতুন করে দেওয়া হলো আরও দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিশ। তবে ভুলে গেলে চলবে না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করলে শুধু ওই প্রতিষ্ঠানই বন্ধ থাকবে। আগের ন্যায় স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে বাইরে চলাফেরা করবে শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে শুধু যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ রাখা হয়, আর সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে, তাহলে কী লাভ হবে আমাদের?

অবশ্যই বাংলাদেশের এ বিষয়–সম্পর্কিত নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যাঁরা থাকেন, বিশেষত যাঁরা এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকেন, তাঁরা অনেক বিজ্ঞ। অনেক ভেবেচিন্তেই হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম দফায় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু পরে পুনরায় দুই সপ্তাহ বন্ধ করার ক্ষেত্রে ঠিক কোন দিক থেকে ভেবেছেন, সেটা অনেকাংশেই আমার বোধগম্য নয়। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে সবকিছুই এখনো সচল। যেমন গণপরিবহনেও স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষিত। বাণিজ্য মেলাও চলছে পুরোদমে। দেশের সব ছোট–বড় শপিং মল বা বিপণিবিতানে নিয়মিত কেনাকাটা চলছে। বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় জনসমাগম কিছুটা কমলেও খোলা রয়েছে সবকিছু। ঢিলেঢালাভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। তারপরও বন্ধ হয়নি বিপণিবিতান বা বিনোদনকেন্দ্র। এখনো দেশের বহু মানুষকে টিকার আওতায় আনা যায়নি।

অন্যদিকে সশরীর ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে এখন থেকে সবকিছু যদি আগের মতো দীর্ঘদিন অনলাইনেই সম্পন্ন করার চিন্তাভাবনা করে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা ঠিক হবে না। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর চরম মূল্য দিতে হবে। কারণ, গত এক বছরে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম, অর্থাৎ পাঠদান সম্ভব হলেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। অনেকেই বলবেন, অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আমিও বলব, হয়েছে, কিন্তু সেটা সিকি পরিমাণ, বাকি জায়গাগুলোতে নেওয়া হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট। এটাকে মূলত পরীক্ষা বললে ভুল হবে। গত এক বছরে অনলাইন ক্লাসের স্বাদ শিক্ষার্থীরা খুব ভালোমতোই পেয়েছে। ডিভাইস না থাকা, নেটওয়ার্ক না থাকা, ডেটা না থাকা, পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিবেশ না থাকাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

বাংলাদেশে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সব আবাসিক হল। অমিক্রনের মধ্যেই খোলা আবাসিক হলে অবস্থান করছেন বহু শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাস বন্ধ হলেও শিক্ষাঙ্গনের আশপাশে গড়ে ওঠা ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাত্রাবাসে অবস্থান করছেন হাজারো শিক্ষার্থী। তাঁরা একসঙ্গে এসব আবাসিক ছাত্রাবাসে বসবাস করছেন। একই ডাইনিংয়ে দল বেঁধে খাওয়াদাওয়া করছেন। দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করছেন। একসঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন।

এসব ক্ষেত্রে অমিক্রনে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে অমিক্রনের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে অজুহাতে শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া মোটেই বোধগম্য নয়। যাঁরা মনে করেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেই শিক্ষার্থীরা বাসায় অবস্থান করবে, তাঁদের সেই আশা মোটেই পূরণ হয়নি। শিক্ষার্থীরা শপিংয়ে যাচ্ছে, সিনেমা হলে যাচ্ছে, টি-স্টলে আড্ডা দিচ্ছে, সুযোগমতো মা–বাবার সঙ্গে পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে যাচ্ছে। কোনো কিছুই থেমে নেই। থেমে গেছে শুধু শিক্ষা।

মোদ্দা কথা হলো করোনা মহামারি পেরিয়ে বিশ্ব যখন নতুন সূর্য দেখবে, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য বাংলাদেশ হয়তো তখন অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা অমিক্রন মোকাবিলার কোনো স্থায়ী সমাধান নয়, বরং দেশের ৭০-৮০ শতাংশ মানুষকে দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় আনা হতে পারে অমিক্রন নিয়ন্ত্রণের কার্যকর সমাধান, যা অতীব জরুরি। যেখানে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই টিকার আওতাভুক্ত, সেখানে সেশনজট রোধে ও মাদকাসক্তির ঝুঁকি এবং আত্মহত্যা থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত রাখতে অতি দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরুর কোনো বিকল্প নেই।

লেখক: মো. শাহ জালাল মিশুক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে অতি দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলুন

শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে অতি দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলুন

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড—বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ উক্তি কেবল প্রবাদের মধ্যেই বিরাজমান। কারণ, এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারঘাট খোলা কিংবা বাণিজ্য মেলা চলছে, সেই স্বাস্থ্যবিধির আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন খোলা রাখা যায় না? পাশাপাশি এটাও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করলেই যে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ হয়ে গেল, তা কিন্তু নয়। কেননা, প্রত্যেক শিক্ষার্থীই একটি পরিবারের সদস্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে হয়তো সেই শিক্ষার্থী বাড়িতে থাকবে, কিন্তু তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঠিকই বাইরে যাচ্ছেন। সেখান থেকেও অসুস্থ হতে পারে, সুতরাং শিক্ষার্থীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে থেকেও নিরাপদ নয়।

ইতিমধ্যেই ইউনিসেফ প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় স্কুল বন্ধ রেখেছে, এমন ১৪টি দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ। এ পরিসংখ্যানের প্রভাব বেশ ভয়াবহ ও বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ, প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে সঙ্গেই এর তাৎক্ষণিক প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনেক শিক্ষার্থীই ফেরেনি শ্রেণিকক্ষে। দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে, বেড়েছে শিশুশ্রম।

বাংলাদেশকে আঘাত করা করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সহজে বলা যায়, আগামী দুই কিংবা তিন সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই আগামী দু-তিন মাস এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে আবারও একটা বড় সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অমিক্রনের প্রভাবে সরকারি আদেশে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছুটি না কাটতেই নতুন করে দেওয়া হলো আরও দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিশ। তবে ভুলে গেলে চলবে না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করলে শুধু ওই প্রতিষ্ঠানই বন্ধ থাকবে। আগের ন্যায় স্বাভাবিকভাবেই প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে বাইরে চলাফেরা করবে শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে শুধু যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ রাখা হয়, আর সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে, তাহলে কী লাভ হবে আমাদের?

অবশ্যই বাংলাদেশের এ বিষয়–সম্পর্কিত নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যাঁরা থাকেন, বিশেষত যাঁরা এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকেন, তাঁরা অনেক বিজ্ঞ। অনেক ভেবেচিন্তেই হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম দফায় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু পরে পুনরায় দুই সপ্তাহ বন্ধ করার ক্ষেত্রে ঠিক কোন দিক থেকে ভেবেছেন, সেটা অনেকাংশেই আমার বোধগম্য নয়। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে সবকিছুই এখনো সচল। যেমন গণপরিবহনেও স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষিত। বাণিজ্য মেলাও চলছে পুরোদমে। দেশের সব ছোট–বড় শপিং মল বা বিপণিবিতানে নিয়মিত কেনাকাটা চলছে। বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় জনসমাগম কিছুটা কমলেও খোলা রয়েছে সবকিছু। ঢিলেঢালাভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। তারপরও বন্ধ হয়নি বিপণিবিতান বা বিনোদনকেন্দ্র। এখনো দেশের বহু মানুষকে টিকার আওতায় আনা যায়নি।

অন্যদিকে সশরীর ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে এখন থেকে সবকিছু যদি আগের মতো দীর্ঘদিন অনলাইনেই সম্পন্ন করার চিন্তাভাবনা করে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা ঠিক হবে না। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর চরম মূল্য দিতে হবে। কারণ, গত এক বছরে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম, অর্থাৎ পাঠদান সম্ভব হলেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। অনেকেই বলবেন, অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আমিও বলব, হয়েছে, কিন্তু সেটা সিকি পরিমাণ, বাকি জায়গাগুলোতে নেওয়া হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট। এটাকে মূলত পরীক্ষা বললে ভুল হবে। গত এক বছরে অনলাইন ক্লাসের স্বাদ শিক্ষার্থীরা খুব ভালোমতোই পেয়েছে। ডিভাইস না থাকা, নেটওয়ার্ক না থাকা, ডেটা না থাকা, পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিবেশ না থাকাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

বাংলাদেশে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সব আবাসিক হল। অমিক্রনের মধ্যেই খোলা আবাসিক হলে অবস্থান করছেন বহু শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাস বন্ধ হলেও শিক্ষাঙ্গনের আশপাশে গড়ে ওঠা ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাত্রাবাসে অবস্থান করছেন হাজারো শিক্ষার্থী। তাঁরা একসঙ্গে এসব আবাসিক ছাত্রাবাসে বসবাস করছেন। একই ডাইনিংয়ে দল বেঁধে খাওয়াদাওয়া করছেন। দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করছেন। একসঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন।

এসব ক্ষেত্রে অমিক্রনে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে অমিক্রনের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে অজুহাতে শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া মোটেই বোধগম্য নয়। যাঁরা মনে করেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেই শিক্ষার্থীরা বাসায় অবস্থান করবে, তাঁদের সেই আশা মোটেই পূরণ হয়নি। শিক্ষার্থীরা শপিংয়ে যাচ্ছে, সিনেমা হলে যাচ্ছে, টি-স্টলে আড্ডা দিচ্ছে, সুযোগমতো মা–বাবার সঙ্গে পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে যাচ্ছে। কোনো কিছুই থেমে নেই। থেমে গেছে শুধু শিক্ষা।

মোদ্দা কথা হলো করোনা মহামারি পেরিয়ে বিশ্ব যখন নতুন সূর্য দেখবে, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য বাংলাদেশ হয়তো তখন অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা অমিক্রন মোকাবিলার কোনো স্থায়ী সমাধান নয়, বরং দেশের ৭০-৮০ শতাংশ মানুষকে দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় আনা হতে পারে অমিক্রন নিয়ন্ত্রণের কার্যকর সমাধান, যা অতীব জরুরি। যেখানে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই টিকার আওতাভুক্ত, সেখানে সেশনজট রোধে ও মাদকাসক্তির ঝুঁকি এবং আত্মহত্যা থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত রাখতে অতি দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরুর কোনো বিকল্প নেই।

লেখক: মো. শাহ জালাল মিশুক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন