চবি প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আইন বিভাগ ও বাংলা বিভাগের নিয়োগ নিয়ে শিক্ষক সমিতির একাংশের অন্যায়, অন্যায্য সিদ্ধান্ত কে ‘শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত ‘ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে উপাচার্যপন্থী সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে এ মানববন্ধন করে উপাচার্যপন্থী সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিন্ডিকেট সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. এনায়েত হক, শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম ও অধ্যাপক ড. রকিবা নবী, পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার ইসলাম, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদারসহ সহকারী প্রক্টরবৃন্দ।
উপাচার্যপন্থী সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ দাবি করেন, বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড আয়োজনে বাঁধা দিয়ে শিক্ষক সমিতির একাংশ উপাচার্যের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তারা উপাচার্যকে তোপের মুখে ফেলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবকিছু যখন স্থিতিশীল তখন শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অমান্য করে উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে তার প্রতি অপমানজনক, বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উপাচার্যের কার্যালয় দখল করবে, যা কখনোই কাম্য নয়। তাদের দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ে সবকিছুর জন্যই আলাদা আলাদা পর্ষদ আছে। চবি প্রশাসন আইন মেনেই সকল নিয়োগ বোর্ড আয়োজন করেছে বলে মানববন্ধনে দাবি করা হয়।
শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি থাকলেও বিভিন্ন স্থানে সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করেন, যা লজ্জাজনক। আমাদেরকে সমিতিতে কথা বলতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা গরিষ্ঠের ভিত্তিতে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের মতো একটা অযৌক্তিক দাবি নিয়ে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে। বর্তমান চবি প্রশাসন সুষ্ঠু নিয়মে আইন মোতাবেক তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে দাবি করেন তিনি।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রকিবা নবী বলেন, তারা শিক্ষকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করছেনা। তারা শুধু প্রশাসনের ভুল ধরতে ব্যস্ত। তারা ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত। শিক্ষক সমিতির তার দায়িত্ব বাদ দিয়ে নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে কোনো আইনের লঙ্ঘন হয়নি। আইন মোতাবেক সকল নিয়ম মেনে এটার বোর্ড আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু, একটি ন্যায় ও ন্যায্য নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করতে শিক্ষক সমিতির একাংশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। এটা খুবই লজ্জাজনক।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির বলেন, শিক্ষক সমিতির কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তারা এই নির্বাচনকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশকে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে রাখতে চাইছে। তাদের সব কর্মকান্ড খুবই নেক্কারজন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক হিসেবে আমরা শিক্ষক সমিতির এমন অযুক্তিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা এই মানববন্ধন আয়োজন করেছি।