প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জেরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে। দাবি আদায়ে ক্লাস ফেলে তারা মাঠে নেমেছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আদালতের এক রায়ে এত দিন জাকির হোসেন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সম্প্রতি মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি দেলোয়া হোসেন প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে জাকির হোসেনকে অপসারণ করে সহকারী শিক্ষক আখলাক হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন। এরই প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের বালিকা শাখায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তারা অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। আন্দোলনরত শিক্ষকরা চান মো. জাকির হোসেনই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকুক। তারা বলছেন, উচ্চ আদালত এবং মাউশির নির্দেশে দায়িত্ব পাওয়া মো. জাকির হোসেনই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধান শিক্ষকের পদে তাকে বহাল করা না হলে তাদের কর্মবিরতি পালন করে যাবেন।
অন্যদিকে শিক্ষকদের আন্দোল বন্ধ করে ক্লাসে ফিরতে আহ্বান করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। আমার প্রতিষ্ঠানে কোনো জামায়াত-শিবিরের লোক থাকবে না, স্বাধীনতাবিরোধী লোক থাকবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ যারা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন, ক্লাসে না ফিরে বিক্ষোভ করছেন, কর্মবিরতি পালন করছেন, তারা যদি আগামীকাল ক্লাসে না ফেরেন তাহলে সবার বিরুদ্ধে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, মামলা করব। এসময় তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে সরিয়ে আখলাক আহমদকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও জানান।
অন্যদিকে শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে আখলাক আহম্মদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার একদিনের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে আবার তা প্রত্যাহার করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের উপস্থিতিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি চাই এই প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা অব্যাহত থাকুক। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলন এবং শিক্ষার স্বার্থে আমি ইস্তফা দিয়েছিলাম। তবে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এবং শিক্ষকদের একাংশের দাবির মুখে আমি দায়িত্ব থেকে ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করেছি। শিক্ষকরা চাইলে আমি এখানে দায়িত্ব পালন করব।
আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষকরা বলেন, বর্তমান অস্থায়ী পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আগে থেকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসা মো. জাকির হোসেনের দ্বন্দ্ব ছিল। এ কমিটির মেয়াদ একেবারে শেষ পর্যায়ে। এমন সময়ে কমিটির এমন সিদ্ধান মানতে নারাজ আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
আন্দোলনরত এক শিক্ষক বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের অবস্থান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এজন্যই তাকে সরানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে কমিটির লোকজন।