The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

শাহবাগে বৃষ্টিতে ভিজে জাতীয় নাগরিক কমিটির সমাবেশ

ঢাবি প্রতিনিধি: জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন, আহতদের চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে শাহবাগে বৃষ্টিতে ভিজে নাগরিক সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আজ শনিবার (৫ অক্টোবর )সকাল ১১ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহব্বায়ক নাসিরউদ্দীন পাটয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যান্য সদস্য, ও জুলাই অভুথানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

সমাবেশে শহীদ মোমিনুল ইসলামের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে গত ( ১৯)জুলাই গুলশানে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।আমি কখনো ভাবতে পারিনি আমি এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারবো। আমার ছেলে আজকে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। আমরা ছেলের জন্য আমি গর্ববোধ করি।কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার ছেলের হত্যাকারীদের এখনো বিচার হয়নি। আমার ছেলে দেশের জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে। আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই আমি যেন হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে পারি।

শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা বলেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষ। আমার ছেলে গত (১৯ জুলাই) বাড্ডায় যখন পুলিশের গুলিতে আহত হয়,তখন আমার ছেলেকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ গতিরোধ করে।পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে আমার ছেলে মারা যায়।ডিবি পুলিশ আমার বাসায় যায়। আমাকে জামায়াত শিবির বলে ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করে।দেশ স্বাধীনের পর আমি ২৮ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সবাই পলাতক। আমি তাহলে কাদের কাছে বিচার চাইবো।দেশ স্বাধীনের পর যেসব সমন্বয়কের ডাকে আমার ছেলে রাস্তায় জীবন দিয়েছে সরকার পতনের পর তারা একটাবার ও আমার খোঁজ নেয়নি।আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহব্বায়ক নাসিরউদ্দীন পাটয়ারী বলেন,বাংলাদেশের ছাত্ররা আরেকটা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যেসব দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল তারাও নিজেদের দল গোছাতে ব্যস্ত।আওয়ামী সরকারের সংবিধান বাতিল করে দ্রুত নতুন সংবিধান করতে হবে। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে হবে।যাদের নির্দেশে নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হয়েছে তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতেই করতে হবে।আমরা রাজনীতির মাঠে প্রতিযোগিতা চাই। আর কোনো প্রতিহিংসা চাইনা।আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করবো যেন দ্রুত হত্যাকারীদের বিচার করা হয়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন,আপনারা জানেন আওয়ামীলীগ সরকার গত কয়েকবছর থেকে বাংলাদেশের মানুষেরা সাথে অন্যায় করেছে। ভারতীয় গোলামীর কারণে এখনো সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে।যারা শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের সুচিকিৎসা দিতে হবে। কিন্তু দুইমাস পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। যারা জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তারা এখনো বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েই চলছে। সাধারণ মানুষেরা নাগালের বাহিরে যাচ্ছে। আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, শত শহীদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে এই বাংলাদেশ। শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেননা। যাদের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে সে সকল সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে।

সমাবেশ থেকে জানানো হয়, হত্যাকারীদের বিচার ও মামলা পরিচালনা করার জন্য সারাদেশে সাত সদস্যের আইনজীবী প্যানেল গঠন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত (৮ সেপ্টেম্বর )রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও ‘নতুন বাংলাদেশের’ রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করে নতুন এ জাতীয় নাগরিক কমিটি।যেটির আহ্বায়ক মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.