সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলমান আন্দোলন দেশকে অস্থিতিশীল করার অব্যাহত চক্রান্তের অংশ মনে করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আজ শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদা ইয়াসমিন ও মহাসচিব অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
ফেডারেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, শাবিপ্রবির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ হলের সব সমস্যা সমাধানে ছাত্রীদের কাছে এক মাস সময় চেয়েছিলেন। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে সময় না দিয়ে দাবি মেনে নিতে আলটিমেটাম দিয়ে আবার আন্দোলন শুরু করেন। ১৬ জানুয়ারি সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। উপাচার্য ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় হঠাৎ একদল উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী তাঁকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা কয়েক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁকে আইসিটি ভবনে নিয়ে যান। সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমন অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে যায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।
ফেডারেশন বলেছে, অভিযোগ রয়েছে, সরকারবিরোধী সুযোগসন্ধানী মহল ইতিমধ্যে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে হলে নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু একটি মহল শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
ফেডারেশন মনে করে, শাবিপ্রবির উপাচার্যের পদত্যাগ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় নয়। বরং তা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে। শাবিপ্রবির বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়টি ও এর শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বিবৃতিতে ফেডারেশনের দুই নেতা আরও বলেন, সমাধানযোগ্য একটি বিষয়কে উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপান্তর করার উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এটি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান শান্ত পরিবেশ বিঘ্নিত করে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একটি মহলের দেশকে অস্থিতিশীল করার অব্যাহত চক্রান্তের একটি অংশ বলে তাঁরা মনে করেন। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তাঁরা।
একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে ফেডারেশন।