কক্সবাজার প্রতিনিধি:আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার এক সাক্ষীর গলা কাটার হুমকি দিয়েছে এক আসামি। পরে সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) কক্সবাজারের অতিরিক্ত দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় নূরে আলম নামের এক সাক্ষীকে এ হুমকি দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম জানান, দ্বিতীয় দফায় দুই জন আসামি তাদের সাক্ষ্য দেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত চলে এই সাক্ষ্যগ্রহণ। এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা স্বাক্ষীদের জেরা করেন।
তিনি জানান, নূরে আলম ও হামিদ মাঝি নামে দুজন এ মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী। ঘটনার দিন কাকে কাকে দেখেছেন, কারা গুলি করেছেন এসব বর্ণনা দিয়েছেন তারা। বুধবার এ মামলার আরো কয়েকজন সাক্ষীকে আদালতে তোলা হবে।
ফরিদুল আলম জানান, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালো ভূমিকা পালন করেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ। ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ১-ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকদারিদের গুলিতে নিহত হন।
মুহিবুল্লাহ হত্যার পরদিন তার ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। এতে সাত জনের নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি। এই সাত জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম ও ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। শুনানি শেষে ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ওইদিন সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী তারিখ ঠিক করা হয়।
এর আগে সোমবার (৩১ অক্টোবর) মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার বাদী নিহতের ভাই হাবিবুল্লাহ আদালতে সাক্ষ্য দেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায় মুহিবুল্লাহর পরিবারের ২৫ জন সদস্য বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ জন ও দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান।