বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক,রাবি:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের শাখা সম্মেলনে বিতর্কিত বহিষ্কৃত নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পদ লাভের সুযোগ করে দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাকি পদ প্রত্যাশীরা।
আগামী ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে রাবি ছাত্রলীগের শাখা সম্মেলন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাবি শাখা ছাত্রলীগের ৩ নেতার উপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের যৌথ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্তে নিজ আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়, উপ-মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকের মোঃ আবু হাশেম ও উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হকের উপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সিকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ কর্তৃক গত ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়কে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্যসহ রাবি ও রুয়েট ক্যাম্পাসে ইয়াবা ও মাদক পাচারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ২০১৯ সালে ২৮ ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হক, উপ-মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকের মোঃ আবু হাশেমকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তন্ময়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার পর পরই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় রাবি ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের। তারা এমন সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন।
নাম বলতে অনিচ্ছুক এক পদপ্রত্যাশী নেতা বলেন, ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করে না। প্রক্সিকান্ডে জড়িত থাকা ও বিভিন্ন অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা তন্ময়কে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ কেন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে সেটা আমাদের বোধগম্য না। আবার সম্মেলনকে সামনে রেখে এ প্রত্যাহার। এমন একজন তন্ময় যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসে তাহলে আাবরো সিট বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কর্মকার্ন্ডে লিপ্ত হয়ে পড়বে এটা অস্বাভাবিক কিছু না।
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে জানতে তাদেরকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, বহিষ্কৃতদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যেটা সংগঠনের জন্য ভালো হয় এবং দলকে সমুন্নত রাখতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস বলেন, কোনো নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হয় তাকে প্রত্যাহার করা যেতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের বিষয়ে জেনে এবং তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছেন।