মোঃ আয়নুল ইসলাম (রাবিপ্রবি প্রতিনিধি): প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারসহ পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখা, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন কার্যকর করার দাবিতে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে আসছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মবিরতি পালন করছেন রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) শিক্ষকরাও।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচি অনুযায়ী, রোববার (৩০ জুন) পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পালন করেন তারা। এতেও দাবি না মানা হলে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন। ১ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাজ থেকে বিরত থাকছেন তারা।
এদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা-২০২৩ প্রজ্ঞাপন হতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার ও কর্মকর্তাদের জন্য ইউজিসির সুপারিশকৃত অভিন্ন নীতিমালায় ১২ দফা সংযোজনের দাবিতে ৪ দিনের অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি)অফিসার্স এসোসিয়েশন।
একই সাথে রাবিপ্রবি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির ব্যানারে কর্মচারীরা সার্বজনীন পেনশন বাতিল, অভিন্ন আপগ্রেডেশন নীতিমালা প্রতিহত ও নবম পে-স্কেল প্রদানের দাবিতে ১ জুলাই থেকে ৩ জুলাই অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন পালন করেছেন।
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মসূচির বেড়াজালে আটকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম। শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। ঈদ-উল আযহার ছুটি শেষে গত ২৩ জুন খুলেছে বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও পুরোদমে ক্লাসে ফিরতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন ব্যাচের চলমান পরীক্ষাগুলোও করা হয়েছে স্থগিত। শিক্ষকদের এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীরা সেশনজটের আশঙ্কা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান শাওন বলেন, যেহেতু এই আন্দোলন একটি বৃহৎ স্বার্থে হচ্ছে সেহেতু আমি একাত্মতা পোষণ করছি এবং আমরা শিক্ষার্থীরা চাই কর্মবিরতির কারণে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হচ্ছে সেটা আমাদের শিক্ষকরা সবাই মিলিত হয়ে যেন পূরণ করেন। শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে যেন শিক্ষার্থীদের সেশনজটে পড়তে না হয়। আমি আশা করি আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আমাদের শিক্ষকরা রাবিপ্রবিকে সেশনজট মুক্ত ও শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলা রাখা হচ্ছে। কিন্তু কর্মবিরতির কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে বা কোন প্রয়োজনীয় কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হলে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা আমাদের জানান, আমাদের এই আন্দোলন তো ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অর্থাৎ আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য। এই বৈষম্য আমরা মেনে নিলে আমাদের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশার প্রতি বিমুখ হবে। তাই আশা করি শিক্ষার্থীরাও আমাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করবে। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বল্পকালীন ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হবে।