The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫

রাত ১২ টা বাজলেই বন্ধ ইবির সব দোকান, দূর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

মোস্তাক মোর্শেদ ইমন, ইবি প্রতিনিধি : দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে রাতভর দোকানপাট খোলা থাকলেও স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ১২ টার মধ্যেই প্রক্টরিয়াল বডির নির্দেশে দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে মাঝরাতে কোনো জরুরি প্রয়োজন মেটাতে শিক্ষার্থীদের নির্ভর করতে হয় পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজারের উপর। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এর আগে ১৪০তম প্রভোস্ট কাউন্সিলের সাধারণ সভায় ছাত্র ও ছাত্রীদের হলে রাতে প্রবেশের সময় নির্ধারণ প্রসঙ্গে সান্ধ্য আইনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে ছাত্রদের রাত ১১ টার মধ্যে হলে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি না করে কেবল মৌখিক নির্দেশ দিয়ে রাত ১২ টার মধ্যে দোকান বন্ধের বিষয়ে একাধিক প্রমাণ রয়েছে প্রতিবেদকের কাছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন অনেকেই।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এমন কোনো নিয়ম থাকতে পারে না। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের অভ্যন্তরে ক্যান্টিন নেই, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নেই শিক্ষার্থীদের জন্য, সেখানে রাত ১২ টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করে তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এর ফলে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়টি নেতিবাচকভাবে ব্র‍্যান্ডিং হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেইসবুক গ্রুপ ইবিয়ান-পরিবারে বাঁধন নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, প্রশাসন সুন্দর একটি নাটক শুরু করেছে। শীতকালীন বন্ধের সময় প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল যে, ছেলেদের হলের গেইট রাত ১১.০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এবং মেয়ের হলের গেইট মাগরিব নামাজের কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত খোলা থাকবে। পরবর্তীতে জনরোষের কারণে সিদ্ধান্তে বদল এনেছিল। আবার এখন নতুন নিয়ম তৈরি করেছে যে, ক্যাম্পাসের দোকানগুলো রাত ১২.০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। কিন্তু এই বিষয়ে এখনও প্রশাসন প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। তার মানে পরোক্ষভাবে প্রশাসন আগের বাতিল নিয়মটি চালু করার চেষ্টা করতেছে। কিন্তু সেটা কোনোদিনও সম্ভব নয়। সবাই তার নিজস্ব স্বাধীনতা অনুযায়ী চলবে। প্রশাসনকে রাত ১২.০০ টা পর্যন্ত দোকানগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত সময়ের বাতিল করার দাবি করছি।

সাইফুল ইসলাম নামের অন্য একজন লিখেন, নতুন নাটক আবার শুরু হলো! রাত ১২ টার পরে ক্যাম্পাসের দোকান বন্ধ করে দিলো। বলছি দাদা তাহলে ক্যান্টিন চালু রাখেন সারারাত, ঐ হ্যাডম তো নাই। রাত ১১ টায় হল বন্ধ করতে না পারায় কি এমন নাটক শুরু হলো? ৭:৩০-৮:০০ টার দিকে ভাত খাওয়ার পরে মঝরাতে যে ক্ষুধা লাগে এখন কি খাব?

উসামাহ বিন হাশেম নামের অন্য একজন বলেন, রাত ১২ টার পর ক্যাম্পাসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে আন্তর্জাতিক হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ইবি। এরপর নোটিশ আসবে রাত ১২ টার পর সব গেইট অফ। এভাবে আর কি কি পদক্ষেপ নিলে আমরা আন্তর্জাতিক মানে সহজে পৌঁছে যেতে পারি?

এবিষয়ে কথা হয় একাধিক দোকানদারের সাথে। তারা জানান, আগে প্রক্টরিয়াল বডি কখনো রাতে দোকান বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিতো না। তবে এই ছুটির পর থেকে রাত ১২ টা বাজার ১০ মিনিট আগেই দোকান বন্ধ করে চলে যেতে নির্দেশ দেন তারা। দোকানিরা আরও বলেন, রাতে অনেকেই আসতো আগে। বসে চা-নাস্তা করে যে যখন ইচ্ছা যেতো। তবে এখন রাত ১২ টার পর ছাত্রদের আর এই সুযোগ নেই।

দোকান বন্ধের নির্দেশ দেয়া কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি ইনচার্জ আশরাফ এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, এইটা মূলত ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য শীতকালীন সময়ে রাত ১২ টার মধ্যে বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এটা মৌখিক নির্দেশ, শীতকালীন সময়ের জন্য। আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করি নি। তীব্র শীতের জন্যই এটা করা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.