মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম: রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য ঘোষিত মহানগরী ও জেলা কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজশাহীর ছাত্রসমাজ। তাঁদের দাবি, আন্দোলনের প্রকৃত নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে বহিরাগত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১২টায় রাজশাহী কলেজের মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে, নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন থেকে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজশাহীর ছাত্রসমাজ এই কমিটি ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাতিলের আল্টিমেটাম দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহীর ছাত্রসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ১০ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যায়। এ সময় রাজশাহীর দুই কৃতিসন্তান আলী রায়হান ও সাকিব আঞ্জুম আন্দোলনে প্রাণ হারান।
তবে নতুন ঘোষিত কমিটিতে আন্দোলনের মূল নেতৃত্বকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, এই কমিটিতে বহিরাগত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে, যারা আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। এছাড়া, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের অভিযোগও তুলেছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ফাতিন মাহাদী ও মাহিন সরকার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিতে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা সরকার-সমর্থিত দল ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। জাসদের ছাত্র সংগঠনের নেতাদেরও গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এছাড়াও কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে একজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামিকে রাখা হয়েছে, যা আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, আন্দোলনের আদর্শ বিকৃত করে একটি গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিলের ষড়যন্ত্র করছে।
বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা কমিটি বাতিলের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তারা কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরিফ সোহেল, আব্দুল হান্নান মাসুদ, হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, রাজশাহীর মাটিতে মাহিন সরকার ও সালাউদ্দিন আম্মারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।