The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪

যৌক্তিকতা নিয়ে ব্যাখ্যা চাইবে পরিকল্পনা কমিশন পরামর্শকের সম্মানি মাসে ৪ লাখ টাকা

তিনটি উপজেলার পরিকল্পনা তৈরিতে একেকজন পরামর্শকের মাসিক সম্মানি ধরা হয়েছে ৪ লাখ টাকা। প্রথম প্রস্তাবে ৩ লাখ টাকা রাখা হলেও সেখান থেকে এক লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন এই প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে ব্যয়। ‘পিরোজপুর জেলার তিনটি উপজেলার (পিরোজপুর সদর, নেছারাবাদ ও নাজিরপুর) উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির যৌক্তিকতা সম্পর্কে ব্যাখা চাইবে পরিকল্পনা কমিশন। ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় পরামর্শকের বেতনসহ অন্যান্য ব্যয়ের বিষয়ে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম রোববার বলেন এক্ষেত্রে পরামর্শকের সম্মানি বেশিই মনে হচ্ছে। তবে যদি তিন লাখ টাকা কম হওয়ায় বুয়েটের স্যারেরা আসতে না চান সেক্ষত্রে শুধু বুয়েট থেকে প্রফেসর না নিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক্সপার্ট নেওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা এসব ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাই করে তারপর ব্যয় প্রাক্কলন করা দরকার।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এটা জাতীয় কোনো জটিল পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। উপজেলার পরিকল্পনা তৈরিতে কেন এত সম্মানি লাগবে। এ বিষয়টি গভীরভাবে দেখা দরকার।

সূত্র জানায়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর। প্রকল্পের আওতায় ব্যক্তি পরামর্শকের পেছনে বেতন হিসাবে খরচ ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। যেটি মোট ব্যয়ের ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশন থেকে বলা হয়েছে, ব্যক্তি পরামর্শক অংশে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টের মাসিক সম্মানি আগে প্রাথমিক প্রস্তাবে ৩ লাখ টাকা ছিল। এখন নতুন প্রস্তাবে ৪ লাখ টাকা করা হয়েছে। একইভাবে হাইড্রোলজি কনসালট্যান্টের মাসিক সম্মানি ৩ লাখ টাকার বদলে ৪ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া কোনো কোনো পরামর্শকের কাজের পরিধি ২১ মাস থেকে বাড়িয়ে ২৪ মাস করা হয়েছে। ফলে ব্যক্তি পরামর্শকের সম্মানি অংশে অতিরিক্ত বেড়েছে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশন থেকে আরও বলা হয়েছে, ফিজিক্যাল ফিচার সার্ভে ব্যয় আগে ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। বর্তমানে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৫ কোটি ২৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। সাব সার্ফেস জিও টেকনিক্যাল অ্যান্ড জিও ফিজিক্যাল স্টাডির ব্যয় ৩০ লাখ ৩২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৬৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা। স্যাটেলাইট ইমেজের ব্যয় ৩১ লাখ ৬১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এসব খাতে ব্যয় বাড়িয়ের ধরার যৌক্তিকতা সম্পর্কে পিইসি সভায় ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।

জানতে চাইলে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক রোববার বলেন, বেশি টাকা না হলে বুয়েটের অধ্যাপকরা পরামর্শক হিসাবে কাজ করতে চান না। আর ভালো পরামর্শক চাইলে বুয়েট থেকে নেওয়া দরকার। এজন্যই পিপিআর’র (পাবলিক প্রকিউরমেনন্ট রুল) সর্বোচ্চ সীমা অনুযায়ীই বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সম্মানি বেশি ধরা হয়নি। কেননা ভ্যাট-ট্যাক্স কাটা হলে দেখা যাবে অনেক কমে আসবে।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির আওতায় উপজেলাগুলোকে দেশের উন্নয়নের মূল ধারার সঙ্গে একত্রীকরণ করা হবে। এছাড়া অপরিকল্পিত রূপান্তর থেকে মূল্যবান কৃষি জমি রক্ষা, ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা তৈরি করা হবে। আরও যেসব কাজ করা হবে সেগুলো হলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন ঝুঁকি কমানোর নীতিমালা তৈরি, গ্রোথ সেন্টার ও বসতির উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হিসাবে বলা হয়েছে, ফিজিক্যাল ফিচার সার্ভে, আর্থ-সামাজিক জরিপ, ভূতাত্ত্বিক জরিপ এবং পরিবহণ জরিপ করা হবে। এছাড়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেজলাইন জরিপ, হাইড্রোলজিক্যাল জরিপ, পিআরএ-সেমিনার এবং ওয়ার্কশপ করা হবে। এগুলোর বাইরে ওয়েব ডিজাইন হোস্টিং, মৌজা ম্যাপ স্ক্যানিং, ডিজিটাইজেশন, এডিটিং অ্যান্ড প্রিন্টিং, স্যাটেলাইট ইমেজ ও মৌজা ম্যাপ কেনা হবে। কম্পিউটার ও সার্ভে ইক্যুইপমেন্ট কেনা এবং তিনটি মোটরসাইকেলসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. যৌক্তিকতা নিয়ে ব্যাখ্যা চাইবে পরিকল্পনা কমিশন পরামর্শকের সম্মানি মাসে ৪ লাখ টাকা

যৌক্তিকতা নিয়ে ব্যাখ্যা চাইবে পরিকল্পনা কমিশন পরামর্শকের সম্মানি মাসে ৪ লাখ টাকা

তিনটি উপজেলার পরিকল্পনা তৈরিতে একেকজন পরামর্শকের মাসিক সম্মানি ধরা হয়েছে ৪ লাখ টাকা। প্রথম প্রস্তাবে ৩ লাখ টাকা রাখা হলেও সেখান থেকে এক লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন এই প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে ব্যয়। ‘পিরোজপুর জেলার তিনটি উপজেলার (পিরোজপুর সদর, নেছারাবাদ ও নাজিরপুর) উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির যৌক্তিকতা সম্পর্কে ব্যাখা চাইবে পরিকল্পনা কমিশন। ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় পরামর্শকের বেতনসহ অন্যান্য ব্যয়ের বিষয়ে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম রোববার বলেন এক্ষেত্রে পরামর্শকের সম্মানি বেশিই মনে হচ্ছে। তবে যদি তিন লাখ টাকা কম হওয়ায় বুয়েটের স্যারেরা আসতে না চান সেক্ষত্রে শুধু বুয়েট থেকে প্রফেসর না নিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক্সপার্ট নেওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা এসব ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাই করে তারপর ব্যয় প্রাক্কলন করা দরকার।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এটা জাতীয় কোনো জটিল পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। উপজেলার পরিকল্পনা তৈরিতে কেন এত সম্মানি লাগবে। এ বিষয়টি গভীরভাবে দেখা দরকার।

সূত্র জানায়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর। প্রকল্পের আওতায় ব্যক্তি পরামর্শকের পেছনে বেতন হিসাবে খরচ ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। যেটি মোট ব্যয়ের ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশন থেকে বলা হয়েছে, ব্যক্তি পরামর্শক অংশে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টের মাসিক সম্মানি আগে প্রাথমিক প্রস্তাবে ৩ লাখ টাকা ছিল। এখন নতুন প্রস্তাবে ৪ লাখ টাকা করা হয়েছে। একইভাবে হাইড্রোলজি কনসালট্যান্টের মাসিক সম্মানি ৩ লাখ টাকার বদলে ৪ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া কোনো কোনো পরামর্শকের কাজের পরিধি ২১ মাস থেকে বাড়িয়ে ২৪ মাস করা হয়েছে। ফলে ব্যক্তি পরামর্শকের সম্মানি অংশে অতিরিক্ত বেড়েছে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশন থেকে আরও বলা হয়েছে, ফিজিক্যাল ফিচার সার্ভে ব্যয় আগে ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। বর্তমানে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৫ কোটি ২৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। সাব সার্ফেস জিও টেকনিক্যাল অ্যান্ড জিও ফিজিক্যাল স্টাডির ব্যয় ৩০ লাখ ৩২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৬৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা। স্যাটেলাইট ইমেজের ব্যয় ৩১ লাখ ৬১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এসব খাতে ব্যয় বাড়িয়ের ধরার যৌক্তিকতা সম্পর্কে পিইসি সভায় ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।

জানতে চাইলে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক রোববার বলেন, বেশি টাকা না হলে বুয়েটের অধ্যাপকরা পরামর্শক হিসাবে কাজ করতে চান না। আর ভালো পরামর্শক চাইলে বুয়েট থেকে নেওয়া দরকার। এজন্যই পিপিআর’র (পাবলিক প্রকিউরমেনন্ট রুল) সর্বোচ্চ সীমা অনুযায়ীই বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সম্মানি বেশি ধরা হয়নি। কেননা ভ্যাট-ট্যাক্স কাটা হলে দেখা যাবে অনেক কমে আসবে।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির আওতায় উপজেলাগুলোকে দেশের উন্নয়নের মূল ধারার সঙ্গে একত্রীকরণ করা হবে। এছাড়া অপরিকল্পিত রূপান্তর থেকে মূল্যবান কৃষি জমি রক্ষা, ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা তৈরি করা হবে। আরও যেসব কাজ করা হবে সেগুলো হলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন ঝুঁকি কমানোর নীতিমালা তৈরি, গ্রোথ সেন্টার ও বসতির উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হিসাবে বলা হয়েছে, ফিজিক্যাল ফিচার সার্ভে, আর্থ-সামাজিক জরিপ, ভূতাত্ত্বিক জরিপ এবং পরিবহণ জরিপ করা হবে। এছাড়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেজলাইন জরিপ, হাইড্রোলজিক্যাল জরিপ, পিআরএ-সেমিনার এবং ওয়ার্কশপ করা হবে। এগুলোর বাইরে ওয়েব ডিজাইন হোস্টিং, মৌজা ম্যাপ স্ক্যানিং, ডিজিটাইজেশন, এডিটিং অ্যান্ড প্রিন্টিং, স্যাটেলাইট ইমেজ ও মৌজা ম্যাপ কেনা হবে। কম্পিউটার ও সার্ভে ইক্যুইপমেন্ট কেনা এবং তিনটি মোটরসাইকেলসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন