সাদিয়া রাহমানঃ আমাদের সমাজে উদ্যোক্তারা সম্মানিত কেননা তারা ভিন্ন কিছু চিন্তা করতে পারেন, সনাতনী ধারায় চলতে থাকা সমাজের বাহিরে যেতে পারেন, প্রচলির রীতি-নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন এবং নিত্য-নতুন আইডিয়া নিয়ে আসতে পারেন। আজ বিশ্বখ্যাত কয়েকজন উদ্যোক্তার সাথে আমরা পরিচিত হব, যারা ব্যতিক্রমি চিন্তাকে সফলতায় রুপায়িত করেছেন।
রবার্ট ক্লাক গ্রাহাম: রবার্ট ক্লাকের আইডিয়া শুনে আপনি হতভম্ব হয়ে যাবেন নিশ্চিত। ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে তিনি “জিনিয়াস স্পার্ম ব্যাংক” প্রতিষ্ঠা করেন যার কাজ হচ্ছে মানুষের শুক্রানু জমা করে রাখা। তাও আবার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শুক্রানু; কেননা তাদের জিনপোল ক্লোন করে তিনি মেধাবী শিশুর বিকাশ ঘটাতে চেয়েছেন যারা বড় হয়ে পূর্বসূরিদের মত বড় বড় সেক্টরে অবদান রাখবে।
রবার্ট এক্ষেত্রে নোবেল বিজয়ী, ক্রীড়াবিদ, গবেষকদের প্রাধান্য দিতেন। ১৯৯৭ সালে মারা যাওয়ার পর ১৯৯৯ সালে তার এই প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে যায়। রবার্ট দাবি করেন ১৯ বছরে তিনি ২২৯ শিশুর ক্ষেত্রে এই প্রজেক্টের সফল অপারেশন চালিয়েছেন।
মার্ক বেনিফ: আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়াতে ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে উঠা মার্ক বেনিফের সফটওয়্যার ও প্রোগ্রামিং এর প্রতি আকর্ষন ছিলো। মার্ক তার কলেজ জীবনের পুরোটাই এই স্কিল রপ্ত করার পিছনে দিয়েছেন। ১৯৯৯ সালে ৩৫ বছর বয়সে সেলসফর্স নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।
এটি মূলত একটি ক্লাউড কম্পিউটিং ও সফটওয়্যার ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ছিলো। তবে তার অভিনব ব্যাপারটি ছিলো এটিকে একটি সার্ভিস হিসেবে দুনিয়ার সামনে উন্মুক্ত করে দেওয়া যেটিকে তিনি বলছেন “Software as a service”. বিশ্বের যে কোন সফটওয়্যার নির্মাতা তার প্রজেক্ট নিয়ে কোম্পানির সাথে কাজ করতে পারবে ও এই সফটওয়্যার ডেভেলপ করতে পারবে। ২০০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম মার্ক বেনিফকে “Young Global Leader” পুরস্কারে ভূষিত করে।
শিশির আসাদ: শিশির আসাদ এর আইডিয়া শুনে আপনি আশ্চর্য হয়ে যাবেন৷ ২০১৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বাংলাদেশের ঢাকাতে তিনি “দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ” প্রতিষ্ঠা করেন যার কাজ হচ্ছে অসহায় মানুষ ও গরীব শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করা ৷ লক্ষ্য দক্ষ জনসমষ্টি গড়ে তোলা৷ বিনা খরচে শিক্ষা নিশ্চিত করা। তার দ্য ফিউচার বাংলাদেশ আজ অব্দি অসহায় মানুষদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে৷ শিশির আসাদ দাবি করেন প্রতিষ্ঠার ৬ বছরে তিনি সহস্রাধিক মানুষকে সহযোগিতা করতে পেরেছেন।
ক্লাইভ পালমার: ক্লাইভ পালমার হলো অস্ট্রেলিয়ার বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। হলিউডের জুরাসিক মুভিতো আপনি দেখেছেন। কিন্তু জুরাসিক মুভির ডায়নাসোর কি সামনা-সামনি কখনো দেখেছেন? এরকমই কিছু করে দেখানোর প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন ক্লাইভ।
তিনি এতটাই সিরিয়াস ছিলেন যে তার দেশের বড় বড় বিজ্ঞানীর সাথে এই প্রজেক্ট নিয়ে লাগাতার কয়েক বছর কাজ করে যান। আসলে তিনি চেয়েছিলেন প্রাগ-ঐতিহাসিক যুগের জুরাসিকের জিন ক্লোন করে অনেকটা ঐরকম আকৃতির ডায়নাসোর উৎপাদন করবেন। বাস্তবে তা সম্বব না হলেও তিনি একটি জুরাসিক পার্ক তৈরি করেছেন যেখানে ঐ ডায়নাসোরদের প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পালমারসেরাস নামে এই পার্কের যাত্রা শুরু হয়।