ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পরপরই পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যের ওপর ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল চীন। আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে চীনের সেই পাল্টা আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিন প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার—চীন, মেক্সিকো ও কানাডার বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থগিত হলেও চীনের ব্যাপারে নমনীয় হননি ট্রাম্প।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি শিগগির অন্যান্য দেশের ওপরও ‘পাল্টা শুল্ক’ আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ক নতুনভাবে গঠন করা হবে। তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি কোন দেশগুলো এই নতুন শুল্কের আওতায় আসতে পারে। তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, এটি ব্যাপক পরিসরে কার্যকর হবে এবং এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতিও কমতে পারে।
যদিও ট্রাম্প শুল্ক আরোপের বিষয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশ দুটির মধ্যে কোনো আলোচনা শুরু হয়নি। ফলে আজ থেকে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১৫ শতাংশ এবং মার্কিন অপরিশোধিত তেল, কৃষিযন্ত্রপাতি ও বৃহৎ ইঞ্জিনবিশিষ্ট গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করছে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রকে অভ্যন্তরীণভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সেখানে ফেন্টানিল পাঠাচ্ছে চীন। ট্রাম্প বলেছেন, ‘চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল পাঠানো বন্ধ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে দেশটির রপ্তানি পণ্যের ওপর আরও বেশি শুল্ক ধার্য করা হবে।’
জবাবে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফেন্টানিল যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা এবং এ নিয়ে চীনের কিছু বলার বা করার নেই। এ ছাড়া ট্রাম্পের এই শুল্কজারির বিরুদ্ধ জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিল বেইজিং।
চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদকের প্রবাহ বন্ধ না হওয়ায় বেইজিংকে শাস্তি দিতে চান ট্রাম্প। এ কারণেই আলোচনার মাধ্যমে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত এক মাসের জন্য স্থগিত করলেও চীনের ব্যাপারে নমনীয় হননি তিনি। ফলে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়। এরপরেই পাল্টা ব্যবস্থা নিল চীন।
এক বিবৃতিতে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেইজিং এরই মধ্যে ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মালিক অ্যালফাবেটের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার তদন্ত শুরু করেছে এবং কেলভিন ক্লেইন, বায়োটেকনোলজি কোম্পানি ইলুমিনাসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন ব্র্যান্ডকে ‘সন্দেহভাজন ও অনির্ভরযোগ্য’ তালিকাভুক্ত করছে।
পৃথক এক বিবৃতিতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে টাংস্টেন, টেলুরিয়াম, মলিবডেনাম, রুথেনিয়াম যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। এই মূল্যবান ধাতুগুলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে চীন।
এর আগে প্রথম মেয়াদে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প, সে সময় ২০১৮ সালে রীতিমতো ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। এ যুদ্ধের প্রধান কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্যহীনতা। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর শত শত কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে চীন, সে তুলনায় চীনে মার্কিন পণ্য রপ্তানির হার বেশ কম। সেবার চী