ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের পথ অনুসরণ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ (ইউএনএইচআরসি) থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর চলাকালেই এই ঘোষণা এলো। আজ বৃহস্পতিবার আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ করে বলেন, পরিষদটি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের সুরক্ষা দেয়। তাদের জবাবদিহি এড়াতে সাহায্য করে এবং মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশ ইসরায়েলকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপদস্থ করে।
তিনি আরও বলেন, ইউএনএইচআরসি মানবাধিকার উন্নয়নের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক দেশগুলোর ওপর আক্রমণ চালায় এবং ইহুদিবিদ্বেষ প্রচার করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য স্পষ্ট। ইউএনএইচআরসিতে ইসরায়েল একমাত্র দেশ, যার নিজস্ব এজেন্ডা রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১০০ টিরও বেশি নিন্দামূলক প্রস্তাব আনা হয়েছে, যা পরিষদে পাস হওয়া সব প্রস্তাবের ২০ শতাংশেরও বেশি। যা ইরান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া ও ভেনেজুয়েলার সম্মিলিত প্রস্তাবের চেয়ে বেশি।’
পরিষদ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার প্রসঙ্গে ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি দানন বলেন, তাঁর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকবে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে অংশগ্রহণ করবে না। এই পরিষদ ‘নৈতিকভাবে ব্যর্থ’।
এক্সে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ একটি পক্ষপাতদুষ্ট সংস্থা, যা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণের ওপর অতি মনোযোগী। আমরা এমন একটি পরিষদকে সমর্থন করব না, যা দীর্ঘদিন আগেই নৈতিক পথ হারিয়েছে।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউএনএইচআরসি থেকে প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে তিনি ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় গঠিত ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাতে (ইউএনআরডব্লিউএ) অর্থায়ন বন্ধের নির্দেশ দেন।
ট্রাম্প এর আগের মেয়াদেও জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে যখন ট্রাম্প প্রশাসন মানবাধিকার পরিষদ থেকে বেরিয়ে যায়, তখন জাতিসংঘে নিযুক্ত প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালি বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্তের কারণ ছিল জাতিসংঘের ‘ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাতিত্ব।’
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বর্তমানে ইউএনএইচআরসির নির্বাচিত সদস্য না হলেও পরিষদটি জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করে।
জেনেভাভিত্তিক ইউএনএইচআরসির ৪৭টি সদস্য দেশ রয়েছে। চার বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে পর্যায়ক্রমে পরিষদে দায়িত্ব পালন করে সদস্যরা। সদস্য দেশগুলোকে অন্যান্য জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়।