The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

যবিপ্রবির ষোড়শ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ কেক কাটা, পিঠা উৎসব, আলোচনা সভা, সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ষোড়শ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। একইসাথে নবীন শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারসহ উপহার সামগ্রী তুলে দিয়ে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়।

তবে ষোড়শ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয় রাত ১২.০১ মিনিটে আতশবাজি ফোটানোর মধ্য দিয়ে। সকাল সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনসহ অন্য অতিথিরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, নেপালের জাতীয় পতাকা ও যবিপ্রবির পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। স্লোগান, বাদ্যযন্ত্রের তালে নেচে-গেয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করে। পরে বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কেক কাটা হয়। বেলা ১১ টায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনসহ অতিথিরা বিভিন্ন বিভাগের পিঠা উৎসবের স্টলসমূহ পরিদর্শন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬টি বিভাগ তাদের পাঠ্যক্রমের থিম অনুযায়ী পিঠা স্টলের বাহারী নামকরণ করে। স্টলগুলোতে নানা ধরণ, বাহারী আকৃতি ও সুস্বাদু পিঠার পসরা দেখে সবাই চমৎকৃত হন।

বেলা সাড়ে ১১টায় সোড়শ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও স্নাতক প্রথম বর্ষের নবীন বরণ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন জীবন সায়াহ্নে। প্রদীপের টিমটিম আলোর মতো। আর তোমরা হলে প্রদীপের উজ্জ্বল শিখা। তোমরাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের কান্ডারি। তোমরা যেন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারো, আমরা সেই দিক-নির্দেশনা দিয়ে যাবো।’ আগামীতে পৃথিবীতে যে মহামন্দা আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তা মোকাবিলায় নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা তুলে ধরে অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটি এখন দৃশ্যমান। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সেশন জট নেই। আশা করি, দুটি হলের নির্মাণকাজ শেষ হলে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূণরূপে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হবে।’ এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যেসব গুণীজন, প্রতিষ্ঠান, সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ নিরলস পরিশ্রম করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মজিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, ডিন অধ্যাপক ড. এইচ. এম. জাকির হোসেন, অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্যা, অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ড. মো. হাফিজ উদ্দিন, ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, গ্রন্থাগারিক (চলতি দায়িত্ব) স্বপন কুমার বিশ্বাস, শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার, শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদ, বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের প্রভোস্ট ড. মো. মেহেদী হাসান, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ড. মৌমিতা চৌধুরী, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহা. আমিনুল হক, প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধানগণ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আলম হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তুসমিত মেহরুবা আঁকা। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দল ও ব্যান্ড ‘অড সিগনেচার’-এর অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়।

উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে আধুনিক জ্ঞান চর্চা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাজিয়ালী মৌজায় ৩৫ একর জায়গা জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। তবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে। যশোর শহরের ধর্মতলাস্থ ‘বৃষ্টি মহল’ নামের একটি ভাড়া বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এ ভাড়া বাড়িতেই ২০০৯ সালে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে ‘কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল’, ‘পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’, ‘অণুজীববিজ্ঞান’ এবং ‘ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স’ বিভাগে ২০০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। ওই বছরের ১০ জুন ভর্তিকৃত ২০০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের শুভ উদ্বোধন করেন। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি অনুষদের অধীনে ২৬টি বিভাগ রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে ৪ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকসহ মোট ৩১৩ জনের অধিক শিক্ষক, বিভিন্ন গ্রেডের প্রায় ১৩৯ জন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ৩১৯ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.