ডেস্ক রিপোর্ট: নানা বিতর্কে জর্জরিত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসর। ক্রিকেটারদের স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়ার মতো অভিযোগ এসেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এরই মধ্যে ১০ জন ক্রিকেটারের নাম এসেছে। আর এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জানা গেছে, বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিট (অ্যাকু) বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
এমন অবস্থায় বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কণ্ঠে কড়া হুঁশিয়ারি, ‘যদি ফিক্সিং প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের জীবন কঠিন করে তুলবো।’ ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।
গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া অভিযোগের সূত্র ধরে অ্যাকু আগেই এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, চলমান বিপিএলের আট ম্যাচে স্পট ফিক্সিং বা ম্যাচ ফিক্সিং হতে পারে বলে জানা গেছে। এছাড়া বর্তমানে নজরদারিতে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা ৬ ক্রিকেটারসহ চার ফ্র্যাঞ্চাইজির ১০ ক্রিকেটার। বাকি ৪ জনের মধ্যে বিদেশি ২ জন।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্দেহের তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে ফ্র্যাঞ্চাইজির হিসাবে সর্বোচ্চ ১২ জন ক্রিকেটার খেলছেন দুর্বার রাজশাহী এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের জার্সিতে। এর বাইরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের ৬ এবং চিটাগাং কিংসের ২ ক্রিকেটারকেও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সন্দেহজনক পারফরম্যান্সের তালিকায় আছে ৮টি ম্যাচ। সেগুলো হচ্ছে- ফরচুন বরিশাল-দুর্বার রাজশাহী (৬ জানুয়ারি), রংপুর রাইডার্স-ঢাকা ক্যাপিটালস (৭ জানুয়ারি), ঢাকা ক্যাপিটালস -সিলেট স্ট্রাইকার্স (১০ জানুয়ারি), দুর্বার রাজশাহী-ঢাকা ক্যাপিটালস (১২ জানুয়ারি), চিটাগাং কিংস-সিলেট স্ট্রাইকার্স (১৩ জানুয়ারি), ফরচুন বরিশাল-খুলনা টাইগার্স (২২ জানুয়ারি)। এছাড়া চিটাগাং কিংস ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের মধ্যকার আরও দুটি ম্যাচ আছে।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবারের বিপিএল শুরু হয় অনেক আশার ফানুশ উড়িয়ে। দেখা গেছে, স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে আগের আসরগুলো আক্ষেপ মিটলেও এবারের আসরে টিকিট অব্যবস্থাপনা, সন্দেহজনক পারফরম্যান্স ও পারিশ্রমিক বকেয়া রাখার মতো বিতর্ক ওঠায়, সে আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। পারিশ্রমিক ও ফিক্সিংয়ের মতো ঘটনা ক্রিকেটের চেতনাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এর মাঝেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে খেলোয়াড়দের বকেয়া পরিশোধে বারবার সতর্ক করছে বিসিবি।
ফিক্সিং ইস্যুতে তদন্ত চলমান আছে জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু প্রোটোকল মেনে চলতে হয়। সে কারণে আমি আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। পুরো তালিকা এবং যেসব ম্যাচ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সেসব আমাদের নজরে আছে এবং সেসব নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।’
এ সময় কঠিন শাস্তির হুমকি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যদি তদন্তে কোনো কিছু (প্রমাণ) বেরিয়ে আসে, এরপর যে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে, সবাই জানেন। আমি যদি সে রকম কিছু পাই, তাদের জীবন কঠিন করে তুলবো, আমি কারও অপরাধের ছাড় দেবো না। সিদ্ধান্ত একটাই আসবে এবং সেটি সবার জন্যই প্রযোজ্য হবে। সেটি হবে দৃষ্টান্তমূলক।’