কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ১০ নং মহা বিপদ সংকেতের মাঝেও উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেছেন অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ । তাদের সৈকত থেকে সরিয়ে নিয়ে টহল দিচ্ছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি ও পুলিশ।
শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৫টার পর থেকে টহল জোরদার করেছে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু সরিয়ে দেয়ার কিছুক্ষণ পর আবার নেমে যায় মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রশাসনের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কোন নির্দেশনাই মানছেন উৎসকু জনতা। পাত্তা দিচ্ছেনা বিচকর্মী, লাইফগার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশকে। উল্টো তর্কে জড়িয়ে পড়ছেন উৎসুক জনতার অনেকেই। শেষমেশ উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দিতে সৈকতে টহল মোতায়েন করেছে বিজিবি।
সৈকতের বিচ কর্মীদের ইনচার্জ মাহাবুব বলেন, সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০ হাজারের বেশি উৎসুক মানুষ ভিড় করেছে। যারা মোবাইলে লাইভ দেয়ার পাশাপাশি ছবি তুলছে। আবার অনেকে অহেতুক সমুদ্রের পানিতে নেমে পড়ছেন। বিচকর্মী মাইকিং করলেও কোনো পাত্তাই দেন না উৎসুক জনতা। সচেতন করতে গেলে রেগে মারতে পর্যন্ত উঠছে তারা। এদের মধ্যে আবার অনেকেই পর্যটকও রয়েছেন।
সাগরপাড়ে দুপুরের দিকে উৎসুক জনতার ভিড় কম দেখা গেলেও বিকেল না হতেও উৎসুক মানুষের ঢল নামে সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে। কেউ একা নামছেন সৈকতে, আবার কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে এসেছেন, আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে নেমে পড়ছেন সাগরপাড়ে।
সৈকতে আসা বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে সাগরের ঢেউ কেমন হয় তা দেখতে এসেছি। তবে কিছুক্ষণ পর চলে যাব।
সোসাল ওয়ার্কার রোমান উদ্দিন বলেন, সৈকতে আসলে কেউই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না।প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্রে নামতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। এসময় আমাদের সকলকে সচেতনতা অবলম্বন করে, নিরাপদে থাকা উচিত।
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আইন অনুষদের ছাত্র তারেকুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন তুলে দেয়ার একটু পর আবারো সমুদ্রে নেমে যাচ্ছেন মানুষ।১০ নম্বর সতর্কতা কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না। আবহাওয়া খারাপের দিকে যাচ্ছে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এসময় বাইরে অবস্থান না করে ঘরে থাকাটাই নিরাপদ।
সি সেফ লাইফগার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ ওসমান বলেন, মানুষ কোনোভাবেই নিষেধ মানছে না। বার বার বলেও উল্টো তর্কে জড়িয়ে পড়ছে মানুষ। তারপরও চেষ্টা করছি, মানুষকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়ার জন্য।
ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান,১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত চলছে কক্সবাজারে। এই জন্যে লোকজনদের সৈকতে নামার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সৈকতের সকল কার্যক্রম। এরপরও অনেকে নামছে সৈকতে। সৈকত থেকে পর্যটকসহ স্থানীয়দের বারবার উঠিয়ে দেয়ার পরও কেউ তা মানছেনা৷ তুলে দেয়ার একটু পর আবারো সৈকতে নামছে তারা।এই জন্যে কঠোরভাবে লোকজনদের বলা হচ্ছে যেন সৈকতে না নামেন। পাশাপাশি বলা হচ্ছে নিরাপদে আশ্রয় নিতে।