লালপুরে বাবা ও মেয়ে একসঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে মেয়ে পাশ করলেও ফেল করেছিলেন বাবা। কিন্তু বাবা আব্দুল হান্নানের আত্মবিশ্বাস ছিলো বোর্ড চ্যালেঞ্জ করলে পাস্ করতে পারবেন, করলেনও তাই। বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে জিপিএ-৪.০৭ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছেন বাবা আব্দুল হান্নান।
আব্দুল হান্নান কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে ইলেকট্রনিক ট্রেড থেকে পরীক্ষা দিয়ে পদার্থ বিষয়ে ফেল করে অকৃতকার্য হয়েছিলেন। তিনি জানান, চ্যালেঞ্জ করে কৃতকার্য হওয়ায় কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান।
আবদুল হান্নান বলেন দীর্ঘ ২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হওয়ার পর আর লেখাপড়া করা হয়নি। দারিদ্র্যের বাস্তবতায় সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে নেমে পড়েন সংসার জীবনে। পৈতৃক সূত্রে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় একটা দোকানে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন।
সংসার জীবনে স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে তার। এক ছেলে আবু হানিফ নিরব (১১) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাইস্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ছোট ছেলে রমজান মিয়ার বয়স মাত্র চার বছর।
ছাত্রজীবনের সেই পরাজয়ের গ্লানি মুছে ফেলার প্রবল ইচ্ছা থেকে লোকলজ্জাকে উপেক্ষা করে ২০২১ সালে উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন আবদুল হান্নান।
বাবা বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে পাস করায় মেয়ে হালিমাও উচ্ছ্বসিত। মেয়ে হালিমা বলেন তার বাবার মেধা আছে এবং ইচ্ছাশক্তি আছে। পরিবারের সবার সমর্থনও রয়েছে। তাই এ বয়সেও তার লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছাটার কারণেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা। অকৃতকার্য হলেও বিশ্বাস ছিল বোর্ড চ্যালেঞ্জ করলে বাবা কৃতকার্য হবেন। বোর্ড চ্যালেঞ্জে আশানুরূপ ফল পেয়ে আমরা আনন্দিত।