কথায় বলে, শাড়িতে নারী। অর্থাৎ শাড়িতেই নারীকে সবচেয়ে বেশি সুন্দর দেখায়। অন্য কোনও সংস্কৃতির কথা ছেড়ে যদি শুধু বাঙালির কথা বলা হয়, তাহলে শাড়ি সম্পর্কে এই সব কথায় সত্য। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাঘাটে হাঁটলে শাড়ি পরার এক বিচিত্র ধরণ দেখা যায়। শাড়ির মধ্যে, ‘পোশাক পরছি অথচ পরছি না’ ধরণের একটা ভাব চোখে পড়ে। শাড়ির এই জেন ওয়াই অবতার চোখে পড়ছে গত এক দশক ধরে। বিগত দু’বছরে এই প্রবণতা ভাইরাসের মত ছড়িয়েছে।
মনে মনে অনেকেই এই প্রবণতা দেখে বিরক্ত হচ্ছেন। কিন্তু কোণঠাসা হওয়ার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খোলেন না। এবার সেই বাধা সরালেন পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর। তার মতে, মর্যাদা রক্ষা করে শাড়ি পরুক মেয়েরা। এখনকার কিছু মেয়ে যেভাবে শাড়ি পরে, ওভাবে শাড়ি পরতে দেখা যায় ল্যাম্প পোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা রাস্তার মেয়েদের মত।
সম্প্রতি কলকাতার একটি শাড়ি–অলঙ্কারের প্রদর্শনীতে ফ্যাশনের সংজ্ঞা জানতে চাওয়া হয়েছিল মমতা শঙ্কর, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়দের কাছে। সেখানে মমতা শঙ্কর বলেন, পুরনো জিনিসের একটা আভিজাত্য আছে। পুরনো ফ্যাশনকে আবার নতুন করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। পুরনোর প্রতি মমতা শঙ্করের সমর্থনের কথা শুনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, তাহলে কি নতুন প্রজন্মের পোশাক আশাক অপছন্দ করেন তিনি? এর জবাবে মমতা শঙ্কর অকপট বলেন, আজকাল মেয়েরা যেভাবে শাড়ি পরে, দেখা যায় তাদের আঁচলও ঠিক থাকে না।
যৌন কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, রাস্তার মেয়েরা ল্যাম্পপোস্টের নিচে যেভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, সেভাবে এখনকার মেয়েরা শাড়ি পরে। রাস্তায় যারা দাঁড়িয়ে থাকে, তারা তো নিজেদের পেশার প্রয়োজনে, পুরুষদের আকর্ষণ করতে ওভাবে শাড়ি পরে। কিন্তু বাকি মেয়েরা বিনা কারণে তাদের অনুকরণ করছে কেন? মেয়েরা ওভাবে শাড়ি পরবে, এরপর ছেলেরা কিছু বললে তারা রেগে যায়। তখন বলবে মেয়েদের অসম্মান করা হচ্ছে। মেয়েদের একটা শালীনতার জায়গা আছে। সেই শালীনতা দেখে ছেলেরা সম্মান করবে। আমাদের নিজেদের এই মর্যাদা যদি না থাকে, তাহলে ছেলেরা সম্মান করবে কিভাবে? আমি এর প্রতিবাদ করছি।
সাংবাদিকরা বলেন, সম্মান–অসম্মান তো পোশাকের উপর নির্ভর করে না। এর জবাবে মমতাশঙ্কর বলেন, আমি হয়তো খুব ভালো মেয়ে কিন্তু শাড়িটা ওভাবে পরব কেন? নিজেকে ওভাবে দেখাতে যাব কেন?