বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির মার্কিন শ্রমবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। দেশটিতে গত মাসে ৩ লাখ ১৫ হাজার নতুন কর্মীর চাকরির সুযোগ হয়েছে, যা গত জুলাই মাসের তুলনায় অনেক কম। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ সংকট আরও প্রকট হবে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত এক সমীক্ষায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে বেকারত্বের হার বেড়ে গেছে। বেকারত্ব ৩ দশমিক ৫ থেকে বেড়ে এখন ৩ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ক্রমেই বৃহত্তম অর্থনীতির এই শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে পড়ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে সুদের হার বাড়িয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ।
গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক কর্মস্থান সৃষ্টি করেও তা গত জুলাই মাসের চেয়ে বেশ কম হয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদদের ধারণার চেয়ে এ সংখ্যা কিছুটা বেশি হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভও শ্রমবাজারের ওপর ব্যাপক নজর রাখছে।
গত সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল সতর্ক করে বলেছেন, মার্কিন অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করতে সুদের হার বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার কেবল বাড়ছেই। বলা যায়, মূল্যস্ফীতি যেন পাগলা ঘোড়ায় সওয়ার হয়েছে। প্রতি মাসেই নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে অর্থনীতির অতিগুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। গত মে মাসে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর এবার জানা গেল, মূল্যস্ফীতির হার ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদের হার অধিক বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও তা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও ধীর করে দিতে পারে। তবে ফেডারেল রিজার্ভ আশা করছে, এতে মন্দা কাটিয়ে শ্রমবাজার আবারও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
মার্কিন অর্থনীতি পরপর দুই-চতুর্থাংশের জন্য সংকুচিত হয়েছে। অনেক দেশে এ পরিস্থিতিতে পৌঁছানোকে নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দা হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক পরিস্থিতি এখনো সেদিকে যায়নি।
ব্রিটিশ ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট ফার্ম ব্রিউয়িন ডলফিনের হেড অব মার্কেট অ্যানালাইসিস জ্যানেট মুই বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার অস্বস্তিজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছিল, যার হার এখনো নিচের দিকেই রয়ে গেছে। এরপরও অসংখ্য মানুষ কাজ করছেন, অসংখ্য মানুষ কাজের সন্ধান করছেন, যা নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি ভালো খবর।
জ্যানেট মুই আরও বলেন, কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যানের হার অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হলেও মজুরি বৃদ্ধি পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য কম ছিল।
কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের আগস্টের তুলনায় প্রতি ঘণ্টায় গড় বেতন ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে।