The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪

মায়ের গহনা বিক্রির টাকায় কোচিং এ ভর্তি হওয়া শাম্মী এখন সহকারী জজ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শাম্মী আক্তার জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা উতরে এবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এবার বিজেএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে মোট ১০৩ জন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনি হয়েছেন ৬৭তম।

অথচ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করার মতো সামার্থ তার ছিলো। উপায় না পেয়ে এগিয়ে আসে তার মা। মায়ের গহনা বিক্রির টাকা দিয়ে কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন শাম্মী আক্তার। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে শেষ করেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। অবশেষে সফলতা ধরা দিয়েছে। হার না মানা শাম্মী আক্তার সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

শাম্মী আক্তারের বাড়ি রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার গংগারামপুর গ্রামে। তার বাবা মৃত কোরবান আলী ও মা রেনুফা বেগম। ৯ ভাইবোনের মধ্যে ৮ম তিনি।  তিনি কলমা হাইস্কুল থেকে জিপিএ ৪.৯৪ এবং শহীদ স্মৃতি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সে সিজিপিএ ৩.৫৫ এবং মাস্টার্সে ৩.৮২ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাপ্তি করেন।

শাম্মী আক্তার বলেন, আমার বড় হওয়ার পেছনে বাবা-মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। মধ্যবিত্ত পরিবারে মা চাইতেন আমি আত্মনির্ভরশীল হই এবং বাবা চাইতেন আমি বিচারক হই। কষ্টের সংসারেও আমার সব শখ পূরণ করে গেছেন। আজ বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তবে তিনি বেঁচে নেই।

তিনি বলেন, পরিশ্রমের বিকল্প কিছু নাই।  নিয়মিত পরিশ্রমই আমার বিচারক হতে সবচেয়ে কাজে লেগেছে। আমি নিয়মিত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা করেছি। শেষের দিকে গ্রুপ স্টাডি করেছি যেটি খুবই কাজে লেগেছে। যে বিষয়গুলো বুঝনি সেগুলো বড় ভাইয়া আপুদের কাছ থেকে জেনে নিয়ে বারবার পড়েছি। ১৪ তম বিজিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভা থেকে বাদ পড়েছিলাম। কোনো কিছু না পাওয়ার মাঝেই হতাশা থাকে। আমিও ব্যতীক্রম ছিলাম না। তবে কঠিন সময়গুলোতে আম্মুকে পাশে পেয়েছি।

বিচারক হিসেবে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং নিজ গ্রামের জন্য কাজ করতে চান শাম্মী আক্তার। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ন্যায় বিচার পায় না। আমি তাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করব। এছাড়া সুযোগ পেলে আমার গ্রামকে নিয়ে কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করব।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. উদ্যোক্তা ও সফলতার গল্প
  3. মায়ের গহনা বিক্রির টাকায় কোচিং এ ভর্তি হওয়া শাম্মী এখন সহকারী জজ

মায়ের গহনা বিক্রির টাকায় কোচিং এ ভর্তি হওয়া শাম্মী এখন সহকারী জজ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শাম্মী আক্তার জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা উতরে এবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এবার বিজেএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে মোট ১০৩ জন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনি হয়েছেন ৬৭তম।

অথচ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করার মতো সামার্থ তার ছিলো। উপায় না পেয়ে এগিয়ে আসে তার মা। মায়ের গহনা বিক্রির টাকা দিয়ে কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন শাম্মী আক্তার। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে শেষ করেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। অবশেষে সফলতা ধরা দিয়েছে। হার না মানা শাম্মী আক্তার সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

শাম্মী আক্তারের বাড়ি রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার গংগারামপুর গ্রামে। তার বাবা মৃত কোরবান আলী ও মা রেনুফা বেগম। ৯ ভাইবোনের মধ্যে ৮ম তিনি।  তিনি কলমা হাইস্কুল থেকে জিপিএ ৪.৯৪ এবং শহীদ স্মৃতি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সে সিজিপিএ ৩.৫৫ এবং মাস্টার্সে ৩.৮২ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সমাপ্তি করেন।

শাম্মী আক্তার বলেন, আমার বড় হওয়ার পেছনে বাবা-মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। মধ্যবিত্ত পরিবারে মা চাইতেন আমি আত্মনির্ভরশীল হই এবং বাবা চাইতেন আমি বিচারক হই। কষ্টের সংসারেও আমার সব শখ পূরণ করে গেছেন। আজ বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তবে তিনি বেঁচে নেই।

তিনি বলেন, পরিশ্রমের বিকল্প কিছু নাই।  নিয়মিত পরিশ্রমই আমার বিচারক হতে সবচেয়ে কাজে লেগেছে। আমি নিয়মিত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা করেছি। শেষের দিকে গ্রুপ স্টাডি করেছি যেটি খুবই কাজে লেগেছে। যে বিষয়গুলো বুঝনি সেগুলো বড় ভাইয়া আপুদের কাছ থেকে জেনে নিয়ে বারবার পড়েছি। ১৪ তম বিজিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভা থেকে বাদ পড়েছিলাম। কোনো কিছু না পাওয়ার মাঝেই হতাশা থাকে। আমিও ব্যতীক্রম ছিলাম না। তবে কঠিন সময়গুলোতে আম্মুকে পাশে পেয়েছি।

বিচারক হিসেবে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং নিজ গ্রামের জন্য কাজ করতে চান শাম্মী আক্তার। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ন্যায় বিচার পায় না। আমি তাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করব। এছাড়া সুযোগ পেলে আমার গ্রামকে নিয়ে কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করব।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন