The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪

মাছ ও মুরগির মূল্য শৃঙ্খলে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক কর্মসূচি

বাকৃবি প্রতিনিধিঃ “বাংলাদেশের মাছ ও মুরগির মূল্য শৃঙ্খলে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিকরণ” শীর্ষক প্রদর্শনী ও প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার রুপালি হ্যাচারিতে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফোর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) ফিড দ্য ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফুড সেফটি (এফএসআইএল) প্রকল্পের অর্থায়নে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, প্রকল্পটি ২০২১ সাল থেকে সাড়ে তিন বছর মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল গবেষকের সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের যুক্তরাষ্ট্র অংশের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর ড. মদন মোহন দে।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক (বাংলাদেশ অংশের) এবং বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আনিসুর রহমান, ময়মনসিংহের মৎস্য বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এইচ. এম নাজমুল হোসাইন নাজির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফাসহ রূপালি হ্যাচারির আশেপাশের মাছচাষীরা অংশ নেন।

এসময় রুই মাছ চাষাবাদে খাদ্য প্রস্তুত থেকে শুরু করে পোনা অবমুক্তকরণ, সময়ে সময়ে মাছের বৃদ্ধি ও ওজন নিরক্ষণ, নিয়মিত পুকুর পরিদর্শন, মাছ আহরণ ও বিক্রয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে যে সমস্ত কার্যাবলী সম্পাদন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনাসমূহ কি হবে, সে সম্পর্কে আলোকপাত করেন অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান। পরবর্তীতে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অধ্যাপক ড. কে. এইচ. এম নাজমুল হোসাইন নাজির গবেষণাগারে করা রুইমাছের মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ফলাফল তুলে ধরে বলেন, দেশের বাজারে মাছ নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে তা হলো বাজারের মাছ খারাপ বা মাছে দূষিত এবং ভারি ধাতুর উপস্থিতি বেশি। কিন্তু আমরা মুক্তাগাছা বাজারের মাছ এবং আমাদের প্রকল্পের রুপালি হ্যাচারিতে চাষকৃত মাছের ব্যাকটেরিয়া এবং ভারি ধাতুর (আর্সেনিক, লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম) পরীক্ষা করি। ফলাফলে দেখা যায় সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে দুই জায়গার মাছেই ব্যাকটেরিয়া এবং ভারি ধাতুর পরিমাণ কম রয়েছে। তবে আমাদের প্রকল্পের হ্যাচারিতে চাষকৃত মাছে ভারি ধাতুর পরিমাণ বাজারের মাছের তুলনায় কম ছিলো। ময়মনসিংহের বাজারের মাছ নিরাপদ এটি এ গবেষণার ফলাফলে উঠে এসেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেন, নিরাপদ মাছ চাষে অবদান রাখতে নারীদের একটি বড় সুযোগ রয়েছে। তবে তাদের সে সুযোগ দিতে হবে। নারীদের মতামতের গুরুত্ব দিবে হবে। এলাকায় তাদের মতামতকে অবহেলা করা হয়।

সৌরভ দাস নামে একজন মাছ চাষী জানান, আমরা তো আসলে জানি না যে কোন খাবার মাছের জন্য ভালো। কেউ যদি বলে যে এই খাবার ভালো বা কারো যদি দেখি যে একটি খাবার ব্যবহার করে উৎপাদন বেড়েছে। তাহলে আমরা সেটি ব্যবহার করি। কিন্তু সেটি নিরাপদ কি না জানি না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলে আমরা নিরাপদ মাছের খাদ্য এবং মাছ পাবো।

উপাচার্য লুৎফুল হাসান বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। সরকারও এবিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে তা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে। এতে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নতি হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. মাছ ও মুরগির মূল্য শৃঙ্খলে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক কর্মসূচি

মাছ ও মুরগির মূল্য শৃঙ্খলে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক কর্মসূচি

বাকৃবি প্রতিনিধিঃ "বাংলাদেশের মাছ ও মুরগির মূল্য শৃঙ্খলে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিকরণ" শীর্ষক প্রদর্শনী ও প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার রুপালি হ্যাচারিতে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফোর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) ফিড দ্য ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফুড সেফটি (এফএসআইএল) প্রকল্পের অর্থায়নে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, প্রকল্পটি ২০২১ সাল থেকে সাড়ে তিন বছর মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল গবেষকের সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের যুক্তরাষ্ট্র অংশের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর ড. মদন মোহন দে।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক (বাংলাদেশ অংশের) এবং বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আনিসুর রহমান, ময়মনসিংহের মৎস্য বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এইচ. এম নাজমুল হোসাইন নাজির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফাসহ রূপালি হ্যাচারির আশেপাশের মাছচাষীরা অংশ নেন।

এসময় রুই মাছ চাষাবাদে খাদ্য প্রস্তুত থেকে শুরু করে পোনা অবমুক্তকরণ, সময়ে সময়ে মাছের বৃদ্ধি ও ওজন নিরক্ষণ, নিয়মিত পুকুর পরিদর্শন, মাছ আহরণ ও বিক্রয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে যে সমস্ত কার্যাবলী সম্পাদন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনাসমূহ কি হবে, সে সম্পর্কে আলোকপাত করেন অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান। পরবর্তীতে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অধ্যাপক ড. কে. এইচ. এম নাজমুল হোসাইন নাজির গবেষণাগারে করা রুইমাছের মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ফলাফল তুলে ধরে বলেন, দেশের বাজারে মাছ নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে তা হলো বাজারের মাছ খারাপ বা মাছে দূষিত এবং ভারি ধাতুর উপস্থিতি বেশি। কিন্তু আমরা মুক্তাগাছা বাজারের মাছ এবং আমাদের প্রকল্পের রুপালি হ্যাচারিতে চাষকৃত মাছের ব্যাকটেরিয়া এবং ভারি ধাতুর (আর্সেনিক, লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম) পরীক্ষা করি। ফলাফলে দেখা যায় সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে দুই জায়গার মাছেই ব্যাকটেরিয়া এবং ভারি ধাতুর পরিমাণ কম রয়েছে। তবে আমাদের প্রকল্পের হ্যাচারিতে চাষকৃত মাছে ভারি ধাতুর পরিমাণ বাজারের মাছের তুলনায় কম ছিলো। ময়মনসিংহের বাজারের মাছ নিরাপদ এটি এ গবেষণার ফলাফলে উঠে এসেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা বলেন, নিরাপদ মাছ চাষে অবদান রাখতে নারীদের একটি বড় সুযোগ রয়েছে। তবে তাদের সে সুযোগ দিতে হবে। নারীদের মতামতের গুরুত্ব দিবে হবে। এলাকায় তাদের মতামতকে অবহেলা করা হয়।

সৌরভ দাস নামে একজন মাছ চাষী জানান, আমরা তো আসলে জানি না যে কোন খাবার মাছের জন্য ভালো। কেউ যদি বলে যে এই খাবার ভালো বা কারো যদি দেখি যে একটি খাবার ব্যবহার করে উৎপাদন বেড়েছে। তাহলে আমরা সেটি ব্যবহার করি। কিন্তু সেটি নিরাপদ কি না জানি না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলে আমরা নিরাপদ মাছের খাদ্য এবং মাছ পাবো।

উপাচার্য লুৎফুল হাসান বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। সরকারও এবিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে তা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে। এতে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নতি হবে।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন