শরীরিক উপকারিতার এবং পুষ্টিগেুণের দিক থেকে বাদামের কোন বিকল্প হয় না। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, ফাইবার, সেলেনিয়াম,ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা নানাভাবে শরীরের কাজে লেগে থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ যদি নিয়মিত এক বাটি বাদাম খাওয়া শুরু করেন, তাহলে একাধিক রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাদামের ভিটামিন ই আর তেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। মস্তিষ্কের জন্য ওয়ালনাট, কাজুবাদাম, আলমন্ড, চীনাবাদাম, পেস্তাবাদাম- সব ধরণের বাদামই খাওয়া উপকার।
বাদামে উপস্থিত ফসফরাস শরীরে প্রবেশ করার পর হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রতিদিন এক বাটি করে বাদাম খাওয়া শুরু করলে হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বাদামে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়।
আমেরিকার অ্যান্ড্রস ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে বাদামে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পরীক্ষার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ম করে বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। বাদামে থাকা অ্যাক্সিডেটিভ ট্রেস কমিয়ে কোষেদের ক্ষত রোধ করে, সেই সঙ্গে ত্বকের এবং শরীরের বয়স কমাতেও সাহায্য করে।
বাদামে রয়েছে প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৪ গ্রাম ফ্যাট সহ ভিটামিন ই, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি২, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। সবকটি উপাদানই শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ প্রয়োজনে লাগে। এক মুঠো বাদাম খেলে শরীরে মাত্র ১৬১ ক্যালরি প্রবেশ করে। ফলে এই খাবারটি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার কোনও ভয় থাকে না।
প্রতিদিনের ডায়েটে বাদামের অন্তর্ভুক্তি ভাল কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। সঙ্গে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। বাদাম খাওয়ার পর ক্ষিদে একেবারে কমে যায়। ফলে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে শরীরে প্রয়োজন অতিরিক্ত ক্যালরি জমে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও কমে।
বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বাদামে উপস্থিত ভিটামিন ই শরীরের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে থাকা কোষেদের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের শরীরে যাতে কোনও ভাবে ক্ষতের সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে বয়স বাড়লেও শরীরের উপর তার কোনও প্রভাব পরে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জলে ভেজানো কাজুবাদাম খেলে দেহের অন্দরে বিশেষ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের প্রকোপও কমে যায়। খাদ্যরসিক বাঙালিদের প্রতিদিন একমুঠো করে বাদাম খাওয়া উচিত।