মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ বুটেক্স শিক্ষার্থীরা
বুটেক্স প্রতিনিধি: বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) আবাসিক হলগুলোতে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষত সন্ধ্যার পর মশার উৎপাত এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে শিক্ষার্থীরা কয়েল ব্যবহার করেও রেহাই পাচ্ছে না। এমনকি দিনের বেলাতেও মশারির নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
মশার এই দুঃসহ অবস্থা শুধু শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবন ও পড়াশোনায় প্রভাব ফেলছে না, বরং ডেঙ্গু এবং অন্যান্য মশাবাহিত রোগের ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফগার মেশিন থাকলেও তা নিয়মিতভাবে ব্যবহার করা হয় না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিয়মিত হয় না এবং কিছু কিছু ড্রেন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে যার ফলে মশার উপদ্রব বাড়ছে এবং শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবন, পড়াশোনা এবং স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
জি.এম.এ.জি ওসমানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিপন কান্তি দে জানান, মশার যন্ত্রণায় সব সময় মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়। টেবিলে বসে পড়া প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মশার উৎপাত চরমে ওঠে। দরজা-জানালা বন্ধ রাখার কারণে রুমে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসও আসে না। তাই আমরা ফগিং কার্যক্রম আরও নিয়মিত করার অনুরোধ জানাই।
শহীদ আজিজ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, হলে মশার উপদ্রবের কারণে আমরা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারি না। প্রতি বছরই অনেক শিক্ষার্থী ডেঙ্গু বা মশাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। হলের চারপাশের জঙ্গল ও আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না, যা মশার বংশবৃদ্ধির প্রধান কারণ। তাছাড়া নিয়মিত ফগিং ও হয় না।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের শিক্ষার্থী দেবাশীষ ঘোষ প্রত্যয় বলেন, নিচতলার রুমগুলোতে মশার উপদ্রব সবচেয়ে বেশি। এই মশার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নিয়মিত ফগিং ও হলের আশপাশ পরিষ্কার করা হলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
মশার উপদ্রব, মশা থেকে বাঁচতে দিনে মশারি টাঙানো একই চিত্র মেয়েদের ছাত্রী হলেও। তাছাড়া শিক্ষকদের বাসভবনেও মশার উপদ্রব পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানা যায়।
শহীদ আজিজ হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদ সরকার বলেন,
সমস্যাটি আগে আমাদের জানানো হয়নি। আমরা বিষয়টি দেখছি এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেব। ফগিং ও স্প্রের কার্যক্রম সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করা হয়, আরও নিয়মিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। হলের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আমরা শীঘ্রই পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের ইন্সপেক্টরের অতিরিক্ত দায়িত্বে নিযুক্ত মো. বাবুল আখতার জানান, আমরা নিয়মিত স্প্রে করি, তবে ফগিং তুলনামূলক কম হয়। মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ফগিং কার্যক্রমের মাত্রা বাড়ানো হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।