মেহেদী হাসান আহাদ: এক সময় রিকশাকে জনতার বাহন বলা হলেও এটি এখন আর নিখাঁদ প্রয়োজন ছাড়া কিছু নয়। কেননা, শখের এই যানবাহনটিতে চাপলেই এখন গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া।ময়মনসিংহ শহরের রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ প্রতিদিনই অতিরিক্ত রিকশা ভাড়ার চাপের মুখে পড়ছেন। শহরের প্রধান গণপরিবহন হিসেবে রিকশার ওপর নির্ভরশীল সাধারণ মানুষ ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে চালকদের সঙ্গে প্রায়শই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন। কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই রিকশাচালকরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া নির্ধারণ করায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে প্রতিদিনের যাত্রীদের।
ময়মনসিংহ শহরে প্রায় ১০,০০০ এরও বেশি রিকশা প্রতিদিন বিভিন্ন রাস্তায় চলাচল করে। তবে ভাড়ার ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা তদারকি না থাকায় চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। এক কিলোমিটার পথের জন্য গড়ে ৩০-৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের, যা সাধারণ মানুষের আর্থিক সামর্থ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
একজন স্থানীয় যাত্রী জানান, “অল্প পথ পাড়ি দিতেই চালকরা ৪০-৫০ টাকা দাবি করেন। এর বিরুদ্ধে কিছু বললে তারা নানা অজুহাতে ভাড়া বাড়ানোর চেষ্টা করেন। নিয়মিত যাত্রী হিসেবে এটা সত্যিই কষ্টকর।”
রিকশাচালকদের দাবি,শহরের অতিরিক্ত জ্যাম এবং বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তারা এই ভাড়া বৃদ্ধি করতে বাধ্য হচ্ছেন। একজন রিকশাচালক বলেন, আমাদের জ্বালানি তেলের খরচ বাড়েনি ঠিকই, কিন্তু পরিবারের খরচ বেড়েছে। আমরা শুধু বাঁচার জন্য এই ভাড়া নিচ্ছি।” চালকদের এই যুক্তি অনেকাংশে সমর্থনযোগ্য হলেও এর কোনো নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ রিকশা ভাড়ার ওপর নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সমস্যাটি ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ভাড়া নির্ধারণে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় নাগরিকেরা। ময়মনসিংহের মতো একটি বিভাগীয় শহরে গণপরিবহন ব্যবস্থা সুষ্ঠু ও সাশ্রয়ী করতে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগ প্রয়োজন। নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা ও তদারকির ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব এছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় নির্দিষ্ট ভাড়া তালিকা প্রদর্শন করা হলে যাত্রী এবং চালক উভয়ের জন্য সুবিধা হতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় নাগরিকদের ।