The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যে বেরোবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি

বেরোবি প্রতিনিধি: সারি সারি বইয়ের তাক,সাজানো হাজারো বই। একটি লাইব্রেরির রুপ এখানেই শেষ নয়। বই সব লাইব্রেরিতে থাকে। লাইব্রেরি শুধুমাত্র বই পড়ার জায়গা হবে তাও নয় । এখানে থাকবে ঐশ্বরিক স্পর্শ, যা পাঠকের মনে শুভ্রতা তৈরি করবে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে এমন অনেক লাইব্রেরি আছে যার রুপে রয়েছে স্বর্গীয় ছোঁয়া। এর সাথে আবার যদি যুক্ত হয় প্রকৃতির সৌন্দর্যের ঘেরা অনিন্দ্য পরিবেশ তাহলে এই লাইব্রেরিকে রূপ দেওয়া যায় সোনায় সোহাগা। ঠিক এমনই একটি লাইব্রেরির হচ্ছে বৃক্ষের জাদুঘর নামে পরিচিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। যার অপরূপ সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে যায় হাজারোও পাঠক।

লাইব্রেরীর চারদিকে জারুল, কৃষ্ণচূরা,বকুল, শিউলি ফুলের সুভাসে মুখরিত থাকে সবসময় যা লাইব্রেরি পরিবেশ কে এক অন্যান্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ফলে অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমিতে পরিনত হয়েছে উত্তর বঙ্গের আলো ছড়ানো এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিন্দ্য সুন্দর এই লাইব্রেরির নাম সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টার।

লাইব্রেরির আশেপাশে সবুজে ঘেরা পরিবেশ সকলকে মুহূর্তের মধ্যে বিমোহিত করবে। এর সবুজ পরিবেশ সবাইকে যেমন মুগ্ধ করবে ঠিক তেমনি পাঠককেও লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে অধির আগ্রহ বাড়াবে। তারই একটি প্রমাণ পাওয়া যায় সাম্প্রতিক সময়ে লাইব্রেরির ভিতরে ছাড়াও উত্তর দিকে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এই সৌন্দর্যে ঘেরা পিন নিরবতা পূর্ণ লাইব্রেরীর বারান্দায় বসে আপন মনে নিরবে লেখাপড়া করে যাচ্ছে । এতে করে নতুন সাজে সজ্জিত হয়েছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল কিংবা বাইরের মেসে পড়াশুনার পরিবেশ না থাকায় আবার যেটুকু আছে সেটুকুতে সন্তুষ্ট না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ও চাকরির জন্য এই গ্রন্থাগারকে বেছে নিয়েছে । সকাল থেকে তাদের আনাগোনা শুরু হয় এই নিরব পরিবেশে পরার জন্য।

ছায়া সুনিবিড় সবুজ শ্যামলে আবৃত এই গ্রন্থাগারের অন্যতম প্রধান একটি বৈশিষ্ট্য যা একজন শিক্ষার্থীকে সহজে মোহে আচ্ছন্ন করে রাখবে। যার ফলে একাগ্রচিত্যে প্রকৃতির নির্মল বাতাসে নিরব ও নিভূত্বে গ্রন্থাগারে বসে অধীর মনোযোগের সাথে লেখাপড়া করতে পারবে। প্রায় ১৬৫০০ হাজার বইয়ের বিপুল সমাহারে সুসজ্জিত এই প্রকৃতির অপরূপ ছায়ায় ঘেরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে নতুন করে প্রায় ২৫০০ কপি বই নতুন করে যুক্ত হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।এই বই গুলোর ৬০% বই শিক্ষার্থীদের রুমে নিয়ে পড়ার জন্যে বরাদ্দ রয়েছে, ৪০% বই লাইব্রেরীতে রিডিং হলে বসে পড়ার রয়েছে। পাশাপাশি ই-বুকের সুবিধা রয়েছে সেখানে প্রায় ১৪ গুণেরও বেশি বই রয়েছে।

লাইব্রেরী কর্তৃপক্ষের ও প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি ছিল, লাইব্রেরির পাশে একটি উন্মুক্ত জায়গা করে দিয়ে তাদের পড়াশুনার একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দেয়া। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদের যোগদানের পরপরই একাডেমিক শৃঙ্খলায় ফিরে পায় বিশ্ববিদ্যালয়টি।

গ্রন্থাগারটিতে প্রবেশপথে প্রথমে ৮ থেকে ৯ টি চেয়ারের একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়, পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন (আউট অফ সেট) নির্মাণ করেছে। উক্ত সেটে/ বারান্দায় দিনে ২৪ ঘন্টা সাপ্তাহে ৭ দিন পড়াশোনা করতে পারে। এখানে টেবিল, চেয়ার, লাইট, ফ্যান, এমনকি ল্যাপটপ চালানোর জন্য ইলেকট্রিক লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যক্তিগত বই চাকরির বই এবং তার ইচ্ছে স্বাধীন যেকোনো বই নিয়ে এসে পড়তে পারে। সকাল হতেই টিন সীটের এ ছাউনিতে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা।কেউ চাকরির পড়াশুনায় ব্যস্ত, আবার কেউ অ্যাকাডেমিক পড়াশুনোয় মগ্ন।

দেখা যায়,লাইব্রেরীতে রয়েছে বড় বড় ৪ টি রিডিং রুম। রিডিং রুম-১ সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, কলা অনুষদভুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বই রয়েছে। রিডিং রুম-২ এখানে গবেষক ও কর্মকর্তাদের জন্য বই রয়েছে। রিডিং হল-৩ বিজ্ঞান অনুষদ, জীব ভূ-বিজ্ঞান, প্রকৌশলী জন্যে বই। রিডিং হল-৪ নিউজ পেপার কর্ণার রয়েছে।

কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে একটি জার্নাল কর্ণার রয়েছে সেই কর্ণারে ২৮ টি জাতীয় পত্রিকা রাখা হয়। এর মধ্য থেকে ১৪টি পত্রিকা আর্কাইভ সেকশন পত্রিকাগুলো সংরক্ষণ করা হয়। আর্কাইভ সেকশনে রাখা পত্রিকাগুলো ভবিষ্যতের যেকোনো দিন যেকোনো সময় শিক্ষার্থীরা পত্রিকাগুলো দেখতে পারবে।

গ্রন্থাগারে বইগুলো ডিপার্টমেন্ট চাহিদা অনুযায়ী লাইব্রেরীতে সংরক্ষণ করা হয়। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্রায় ১৪০০০ বই ছিল আরো নতুন করে প্রায় ২৫০০ বই যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি ই-বুকের সুবিধা রয়েছে সেখানে প্রায় ১৪ গুণেরও বেশি বই রয়েছে। সম্প্রীতি লাইব্রেরীর উত্তর পাশে বারান্দায় পড়ালেখার সুব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।এতে নতুন সাঁজে রূপ পেয়েছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে প্রত্যেকটি বইয়ে আন্তর্জাতিক কোড ব্যবহার করা হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করে। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার রয়েছে। এছাড়াও এখানে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই রয়েছে।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি দুই শিফটে পরিচালিত হয়, সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

এম.কে. পুলক আহমেদ/

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.