শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এমন দাবি সম্পর্কে রাষ্ট্রের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। এমন বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। উপমন্ত্রী বলেছেন, “অতি উৎসাহী হয়ে অযৌক্তিক দাবি যদি উপস্থাপিত হয় এবং কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ব্যতীত, এমন অযৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোন তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, “মন্ত্রী মহোদয়ের পর্যায় থেকে আলোচনা করা হচ্ছে। সেই আলোচনার পর আমরা যেটা বুঝতে পারছি এখানে ইগো সমস্যা বেশি, বাস্তব সমস্যার চেয়ে। ”
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী আরো বলেন, “আচার্য নিয়োগকৃত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্যকে চাইলেই সরিয়ে দেওয়া যায় না। সবাইকে একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সঠিকভাবে উপস্থাপন করলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু কোন অর্থনৈতিক বিষয়ে কোন অভিযোগ তারা তুলতে পারেনি। ”
উপমন্ত্রী বলেন, “কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত আমরা তো তাকে বাদ দিতে পারি না। যেভাবে সমাধান চাওয়া হচ্ছে যে ভিসিকে এখনই চলে যেতে হবে – সেটা কাম্য নয়। ”
এর আগে, শনিবার রাতে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনির সঙ্গে আলোচনার পর আজ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে শিক্ষকদের নিয়ে আয়োজিত এক সভা শেষে এ মন্তব্য জানায় তারা।
শিক্ষক সমিতির প্যাডে লিখিত আকারে বলা হয়, উপচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এক্ষেত্রে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ জানুয়ারি রাত থেকে শুরু হওয়া প্রভোস্টবিরোধী আন্দোলনে ১৬ জানুয়ারি পুলিশের হামলা চালিয়ে ৩০ শিক্ষার্থীকে আহত করলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি ওঠে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনসহ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শনিবার গণ-অনশনের ঘোষণা দিয়ে সেখানে আরো শিক্ষার্থী যোগ দেন। অনশনরত অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আবারও অনশনের যোগ দেন।